জলসঙ্কট শ্যামপুরে

কোথাও নোংরা জল, কোথাও সরবরাহই বন্ধ

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সরবরাহ করা পানীয় জল পানের অযোগ্য। তার উপর নলকূপের সমস্যা। সব মিলিয়ে তীব্র জল সঙ্কটের মুখে পড়েছেন হাওড়ার শ্যামপুর ২ ব্লকের খাড়ুবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর, খিদিরপুর-সহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। অথচ সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩৮
Share:

জলের জন্য অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সরবরাহ করা পানীয় জল পানের অযোগ্য। তার উপর নলকূপের সমস্যা। সব মিলিয়ে তীব্র জল সঙ্কটের মুখে পড়েছেন হাওড়ার শ্যামপুর ২ ব্লকের খাড়ুবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর, খিদিরপুর-সহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। অথচ সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, খিদিরপুর-সহ অন্য গ্রামগুলিতে মাস তিনেক ধরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা জল অত্যন্ত নোংরা। ফলে সেই জল ব্যবহার করতে পারছেন না বাসিন্দারা। পাশাপাশি খিদিরপুর গ্রামে আবার দু’সপ্তাহ ধরে পাইপ লাইনে জল সরবরাহই বন্ধ। এলাকার মানুষ যে নলকূপের জল ব্যবহার করবেন তারও উপায় নেই। কারণ, এলাকার নলকূপগুলির জলও ভাল নয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। নলকূপের জল পাত্রে কিছুক্ষণ রাখলেই তা লাল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উপায় না থাকায় সেই জলই বাধ্য হয়ে খাচ্ছেন অনেকে। কেউ জল ফুটিয়ে খাচ্ছেন। খিদিরপুরের বাসিন্দা অমিতা দালাল বলেন, ‘‘জলের জন্য খুবই সমস্যায় পড়েছি। পুকুরের জলই ব্যবহার করছি। বাড়িতে অসুস্থ রোগী রয়েছে। তাঁকে নলকূপের জল বা পাইপ লাইনের নোংরা জলই ব্যবহার করতে হচ্ছে।’’ জ্যোৎস্না মণ্ডল, নিভা পাড়ুই সহ অন্যদেরও একই অবস্থা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে জানাতে গেলে কেউই কর্ণপাত করছেন না।

তবে একই সঙ্গে সমস্যার সমাধান কে করবে তা নিয়ে প্রশাসনেই দুই তরফে চাপানউতোরের অভিযোগও উঠেছে। যে সব গ্রামে জলসঙ্কট সেগুলি শ্যামপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লকের অধীন। অথচ যে পাম্প থেকে জল সরবারহ করা হয় সেটি শ্যামপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির এলাকার মধ্যে পড়ে। ফলে সমস্যার প্রতিকার চাইতে গেলে শ্যামপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি দায় চাপাচ্ছে ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির উপরে। আবার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লকের কাছে গেলে তাদের বক্তব্য, এটা ২ নম্বর ব্লকের সমস্যা। তাই তারা নয়তো পিএইচই দেখবে।

Advertisement

যদিও দুই পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাই এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শ্যামপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জুলফিকার রহমান বলেন, ‘‘জলের সমস্যার কথা জানি না। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে ওই এলাকায় জল সরবরাহ করা হয় যে পাম্প থেকে সেটা শ্যামপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির এলাকা। তাদের সঙ্গেও কথা বলব।’’ শ্যামপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রঞ্জিত বেরা বলেন, ‘‘সমস্যা নিয়ে পএইচই-র সঙ্গে কথা বলে মেটানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’

পিএইচই সূত্রে খবর, ওই এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা হয় মণ্ডলপাড়া এলাকার পাম্প হাউস থেকে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় পাইপ ফেটে যাওয়ায় খিদিরপুর এলাকায় নোংরা জল যাচ্ছে। ফলে ওই এলাকার পাইপে জল সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আর অন্যত্র যে লাল জল যাচ্ছে তার কারণ, ওই পাম্প হাউসে দু’টি পাম্প রয়েছে। আগে একটিই চালানো হত। কয়েক মাস ধরে আর একটিও চালানো হচ্ছে। সেজন্যই হয়তো পাইপের ময়লা জলে মিশছে। কিছুদিন পর ঠিক হয়ে যাবে। তা ছাড়া পাইপের অবস্থাও খতিয়ে দেখা হবে।

এই অবস্থায় পুজোর আগেই জল সমস্যা মেটে কি না তারই অপেক্ষায় বাসিন্দারা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন