প্রতীকী ছবি।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসককে দিয়ে রোগী দেখানোর প্রতিবাদে সোমবারেও বিক্ষোভ হল হিন্দমোটরের নার্সিংহোমে। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার দেবাশিস সরকারের শাস্তির দাবিতে সরব হলেন বিক্ষোভকারীরা। অন্য দিকে, দেবাশিসবাবুর উপর হামলার প্রতিবাদে চিকিৎসকরা এ দিন কালো ব্যাজ পরেন। আজ, মঙ্গলবার তাঁরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন।
শনিবার রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে হিন্দমোটরে জিটি রোডের ধারের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় দিলীপ সরকার নামে এক ব্যক্তিকে। ইসিজি করানোর পরে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বিপত্তি বাধে এরপরই। মৃতের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রাতে গণেশ চৌধুরী নামে যে চিকিৎসক দায়িত্বে ছিলেন, তিনি আয়ুর্বেদিক। অ্যালোপ্যাথি নার্সিংহোমে কেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক চিকিৎসা করাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার উপর প্রথমে গণেশবাবু এবং পরে দেবাশিসবাবু নিজে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ লেখেন। দু’টি শংসাপত্রে মৃত্যুর সময়ও দু’রকম।
বিষয়টি জানাজানি হতেই রবিবার সকাল থেকে নার্সিংহোম চত্বর তেতে ওঠে। গণেশবাবু এবং দেবাশিসবাবুকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানো হয়। জিটি রোড অবরোধ করা হয়। পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার রেশ গড়াল মঙ্গলবারেও। এ দিন সকালে জনা পনেরো লোক নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পোস্টার সাঁটা হয়।
এ দিন দেবাশিসবাবু উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের সঙ্গে দেখা করেন। পরে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘কেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে সদুত্তর পাইনি। গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানাব। তারপর পুরসভা পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, এ দিন এসিএমওএইচ (শ্রীরামপুর) মৌসুমী পাল বন্দ্যোপাধ্যায় ওই নার্সিংহোমে তদন্তে গিয়েছিলেন। মৃতের পরিবারের লোকজনকে চিঠি দিয়ে শুনানির জন্য ডাকা হবে। শুভ্রাংশুবাবু বলেন, ‘‘তদন্ত করেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
নার্সিংহোম সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, রাতে প্রায় আড়াইশো লোক নার্সিংহোমে এসে হামলা চালায়। ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ও লেখানো হয় জোর করে। স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ দিন সন্ধ্যায় দেবাশিসবাবুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আপনি পরে আসুন। কথা বলব।’’ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আজ, মঙ্গলবার তাঁরা চেম্বার বন্ধ রাখবেন। তবে শহরেই দু’ জায়গায় শিবির করে রোগী দেখা হবে।
পুরপ্রধান দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কর্মবিরতি না করার অনুরোধ করছি। কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসকরা আমাদের জানান।’’