হাওড়ায় পাম্প হাউসের দায়িত্ব নিয়ে টানাপড়েন

বছর দুই আগে রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর হাওড়া জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়ে   পাম্পহাউসগুলি পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। তার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে ‘ভিলেজ লেভেল ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন কমিটি’ (ভিডব্লিউএসসি) তৈরি করতে বলা হয়।

Advertisement

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫০
Share:

ফাইল চিত্র।

গ্রামের পাম্প হাউসগুলির দায়িত্ব নিক পঞ্চায়েত— এমনটাই চাইছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কিন্তু পঞ্চায়েতগুলি সেই দায়িত্ব নিতে নারাজ। এই নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মধ্যে। সমস্যাটি হাওড়া জেলার।

Advertisement

হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ায় ৬৩টি পাম্প হাউস রয়েছে। মূলত এগুলির মাধ্যমেই গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। এর মধ্যে ৮টি পাম্প হাউসের দায়িত্বে রয়েছে জেলা পরিষদ। বাকিগুলির দেখভাল করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। বছর দুই আগে রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর হাওড়া জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়ে পাম্পহাউসগুলি পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। তার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে ‘ভিলেজ লেভেল ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন কমিটি’ (ভিডব্লিউএসসি) তৈরি করতে বলা হয়। শুধু পুরনো পাম্পহাউসের হস্তান্তর নয়, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর নতুন যে পাম্পহাউস তৈরি করবে সেগুলিও স‌‌‌ংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের হাতে দিতে বলা হয়। রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক কর্তা জানান, পাম্প হাউস তৈরির বেশিরভাগ টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, পাম্প হাউসগুলিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামবাসীদেরই চালাতে হবে। পাম্প হাউসগুলির দায়িত্ব না নিলে পঞ্চায়েতগুলিকে দেওয়া চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকার একাংশ কেটে নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

কিন্তু তারপরেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বললেই চলে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সেই নির্দেশ মেনে জেলার ১৫৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই কমিটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু ওইটুকুই। তারপরে কাজ এগোয়নি। পাম্পহাউসগুলির হস্তান্তরও হয়নি। ভিডব্লিউএসসি তৈরি হলেও সেই কমিটির কাজ নেই বললেই চলে।

Advertisement

কী বলছে পঞ্চায়েত? তাদের বক্তব্য, পাম্পহাউসগুলির বিদ্যুতের বিল বা কর্মীদের বেতন তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। সেই টাকা কে দেবে সেই নিয়ে স্পষ্টভাবে কোনও নির্দেশ না দিলে তারা পাম্প হাউসের দায়িত্ব নিতে পারবে না। একাধিক পঞ্চায়েতের প্রধানের বক্তব্য, রাজ্য সরকার জলকর নিতে বারণ করেছে। তাহলে পাম্পহাউস দেখভালের টাকা আসবে কোথা থেকে? এছাড়া জেলার অনেক পাম্পহাউস বেশ পুরনো। সেগুলি থেকে সঠিক পরিষেবাও মেলে না। সেগুলি হাতে নিলে খরচ আরও বাড়বে।

পঞ্চায়েতগুলির সমস্যার কথা মানলেও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক কর্তা জানান, পুরনো ও নতুন জলপ্রকল্পই পঞ্চায়েতকেই চালাতে হবে। না হলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যকে জবাবদিহি করতে হতে পারে। জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান, পাম্প হাউস চালানোর জন্য যাতে কিছুটা হলেও যাতে জলকর নেওয়া যায় সেই নিয়ে তারা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement