কারখানায় মালিকের ঝুলন্ত দেহ, ধৃত স্ত্রী

মৃতের বাবা দুলু মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁর ছেলের সঙ্গে বউমার প্রায় প্রতিদিনই অশান্তি হত। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় পৌনে ১১টা পর্যন্ত তাঁদের ঝগড়ার আওয়াজ পেয়েছিলেন দুলুবাবুরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০২:২২
Share:

কারখানার ভিতরে উদ্ধার হল মালিকের ঝুলন্ত দেহ। শুক্রবার সকালে, হাওড়ার ব্যাঁটরা থানা এলাকার মধুসূদন পালচৌধুরী লেনে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আনন্দ মণ্ডল (৩২)। তিনি লোহার ব্যবসা করতেন। মৃতদেহের কাছ থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। তাতে ওই যুবক নিজের মৃত্যুর জন্য স্ত্রীকে দায়ী করেছেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্ত্রী মৌমিতা মণ্ডল ওরফে পূজাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহের মুখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই আঘাতগুলি কীসের, তা ময়না-তদন্তের পরেই জানা যাবে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে আনন্দ ও মৌমিতা পরস্পরকে ভালবেসে বিয়ে করেন। সমস্যা শুরু হয় বছর পাঁচেক আগে তাঁদের একমাত্র ছেলে শুভম জন্মানোর পরে। তখন থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-অশান্তি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাতেও দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া-মারামারি হয় বলে এলাকা সূত্রের খবর। অভিযোগ, ওই সময়েই আনন্দের শরীরে ধারালো কোনও জিনিস দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করেন তাঁর স্ত্রী। পুলিশ জানায়, এর পরে রাতে স্ত্রীর সঙ্গে না থেকে বাড়ির লাগোয়া নিজেদের কারখানায় শুতে যান আনন্দ। এ দিন সকালে আনন্দের মা অর্চনাদেবী কারখানায় গিয়ে দেখতে পান, তাঁর ছেলে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন।

মৃতের বাবা দুলু মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁর ছেলের সঙ্গে বউমার প্রায় প্রতিদিনই অশান্তি হত। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় পৌনে ১১টা পর্যন্ত তাঁদের ঝগড়ার আওয়াজ পেয়েছিলেন দুলুবাবুরা।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘বউমা মাঝে মাঝে কাউকে না বলে বাইরে বেরিয়ে যেত। ছেলের কাছ থেকে শুধু হাতখরচের টাকা চাইত। তা নিয়ে প্রশ্ন করলেই তুমুল অশান্তি হত। শুধু আমার ছেলেকে মারধর নয়, আমার স্ত্রীর গায়েও হাত তুলত।’’

পুলিশ জানায়, এর আগেও দু’বার আনন্দের পরিবারের তরফে থানায় মৌমিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। পুলিশ দু’পক্ষকে থানায় ডেকে বোঝানোর চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু তাতেও অশান্তি থামেনি।

এ দিন দুপুরে আনন্দের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, মৌমিতার জন্যই আনন্দ আত্মঘাতী হয়েছেন। তাই তাঁর উপযুক্ত শাস্তি চান তাঁরা। এ দিন অভিযুক্ত বধূকে হাওড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে দু’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন