বজ্রাঘাতে স্বামীর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ নেই

ছ’বছরেও রিপোর্ট মেলেনি, ক্ষোভ স্ত্রীর

পঞ্চায়েতের দেওয়া শংসাপত্রে আছে ‘বজ্রাঘাতে মৃত্যু’। পুলিশি তদন্তের রিপোর্টও এক।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

খানাকুল শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩১
Share:

পঞ্চায়েতের দেওয়া শংসাপত্রে আছে ‘বজ্রাঘাতে মৃত্যু’। পুলিশি তদন্তের রিপোর্টও এক। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও আঘাত উল্লেখ করার নির্দিষ্ট জায়গায় ‘বজ্রাঘাত’ লিখেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। কিন্তু ছ’বছরেও ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট মেলেনি। তাই প্রশাসনিক গাফিলতিতে বজ্রাঘাতে স্বামীর মৃত্যুর ছ’বছর পরেও সরকারি ক্ষতিপূরণ মিলছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন খানাকুলের জোড়ুর গ্রামের মৃত রবীন ভৌমিকের স্ত্রী স্বপ্না। স্বামীর মৃত্যু সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে তাঁকে এখনও দৌড়তে হচ্ছে পঞ্চায়েত অফিস, ব্লক অফিস বা মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

জোড়ুর গ্রামটি খানাকুল-২ ব্লকের রাজহাটি-২ পঞ্চায়েত এলাকায়। রবীন দিনমজুরের কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, “প্রশাসনিক উদাসীনতাতেই স্বামীর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অসম্পূর্ণ দিয়েছে হাসপাতাল। ওই রিপোর্টের সঙ্গে ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট দেয়নি। বহু আবেদনেও কাজ হয়নি। এ জন্য অনেক কাজ আটকে যাচ্ছে।’’

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের পরিবারকে সাধারণত চার-পাঁচ মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। বজ্রাঘাতে মৃতের পরিবারের জন্য ন্যূনতম দু’লক্ষ টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কেন ছ’বছরেও বিষয়টির মীমাংসা হল না? বিডিও দেবল উপাধ্যায় বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যাঁরা মারা যান, মানবিক কারণে অনেক চিকিৎসকই তাঁদের দেহের ময়নাতদন্তের পরে ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠান না। সে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দিতেও দেরি হয় না। কিন্তু যেগুলি ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠানো হয়, সেই রিপোর্ট পেতে ৭-৮ বছর পর্যন্ত দেরি হওয়ার নজির আছে। এ ধরনের ঘটনাগুলি জেলা প্রশাসনে পাঠিয়ে নিষ্পত্তি করা হয়।’’ এ ক্ষেত্রেও বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বলে বিডিও জানান।

Advertisement

গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে রাজহাটি-২ পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক দিলীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সমস্ত কাগজপত্র ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে পাঠানো হয়েছে। তারা বিবেচনা করছে।” ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক বিধায়ক শীল বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অমীমাংসিত থাকায় এই জটিলতা। বিষয়টি নিয়ে জেলায় যোগাযোগ করা হয়েছে।’’

পুলিশ ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ৮ জুলাই খেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন রবীন। সেখানেই বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যুর কথা চাউর হওয়ায় পুলিশ গিয়ে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে ময়নাতদন্তের পরে দেহের নমুনা ভিসেরা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। কেন সেই সময় ভিসেরা পরীক্ষার প্রয়োজন হয়েছিল তা নিয়ে কিছু জানাতে পারেননি মহকুমা হাসপাতালের বর্তমান সুপার শিশির নস্কর। তিনি জানান, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন