অয়ন সেন
পুকুরে সাঁতার শিখতে নেমে মৃত্যু হল এক তরুণের। মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে চন্দননগরের বারাসত এলাকার একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। পুলিশ সেখানকার তিন জনকে আটক করেছে। মৃতের নাম অয়ন সেন (১৮)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় মরান রোডে। চন্দননগর কানাইলাল বিদ্যামন্দির (ইংরেজি বিভাগ) থেকে এ বার তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০ এপ্রিল থেকে ‘চন্দননগর সুইম সেন্টারে’ সাঁতারের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন অয়ন। তবে সুইমিংপুল বলতে যা বোঝায়, সেটি তা নয়। এলাকার একটি পুকুরে সাঁতার শেখায় ওই সংস্থা। এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ অয়ন সেখানে যান। হাতে থার্মোকলের বোর্ড (ফ্লোটার) নিয়ে তিনি সাঁতার কাটছিলেন। সেই সময় সেখানে জনা দশেক শিক্ষার্থী ও পাড়ে কয়েক জন অভিভাবক দাঁড়িয়ে ছিলেন। দু’জন প্রশিক্ষকও ছিলেন।
সকাল সওয়া ৭টা নাগাদ হঠাৎই অন্য শিক্ষার্থীরা দেখেন, অয়নের হাতের বোর্ডটি ভাসছে। অয়ন ডুবে গিয়েছে। পাড়ে দাঁড়ানো লোকজন চেঁচামেচি শুরু করেন। এর পরেই তাঁকে জল থেকে উদ্ধার করা হয়। চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। অয়নের দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায় চন্দননগর থানার পুলিশ।
অয়নের মৃত্যুর জেরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রশিক্ষক উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ছেলেটি কী ভাবে ডুবে গেলেন, সেই প্রশ্ন তোলা হয় তাঁর পরিবারের তরফে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের লোকজনের গাফিলতির কারণেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন অয়নের বাবা দীপক সেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ডুবে ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে, না কি জলে আচমকা অসুস্থ হয়ে ওই ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। আপাতত ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দুই কর্মকর্তা এবং এক প্রশিক্ষককে আটক করা হয়েছে।’’
ক্লাবকর্তা এবং প্রশিক্ষকেরা অবশ্য পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁদের তরফে কোনও গাফিলতি হয়নি। আচমকাই ছেলেটি ডুবে যান। বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে উদ্ধার করা হলেও বাঁচানো যায়নি।