দাশনগর

বন্ধুর বাড়িতে এসে দুষ্কৃতীর গুলিতে মৃত্যু হল যুবকের

ঠিক ছিল, বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রী ও সদ্যোজাত কন্যাকে দেখতে যাবেন হাসপাতালে। কিন্তু বন্ধুকে ডাকতে এসে তাঁর বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল বছর চব্বিশের ওই যুবকের। মৃতের নাম সঞ্জয় দাস। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার দাশনগর থানা এলাকার ঘিঞ্জি বসতিপূর্ণ পাড়া বলে পরিচিত কাশীপুরের পি রোডে। আর এই ঘটনা ফের বেআব্রু করে দিল পুলিশি ব্যর্থতাকে। প্রশ্ন উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০০:২৪
Share:

ঠিক ছিল, বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রী ও সদ্যোজাত কন্যাকে দেখতে যাবেন হাসপাতালে। কিন্তু বন্ধুকে ডাকতে এসে তাঁর বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল বছর চব্বিশের ওই যুবকের। মৃতের নাম সঞ্জয় দাস। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার দাশনগর থানা এলাকার ঘিঞ্জি বসতিপূর্ণ পাড়া বলে পরিচিত কাশীপুরের পি রোডে। আর এই ঘটনা ফের বেআব্রু করে দিল পুলিশি ব্যর্থতাকে। প্রশ্ন উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কাশীপুর পি রোডের বাসিন্দা গোবিন্দ মান্নার ছেলে সত্যের সঙ্গে পাশের পাড়ার সঞ্জয়ের দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব। সেই সুবাদে ওই বাড়িতে সঞ্জয়ের নিয়মিত যাতায়াতও ছিল। মঙ্গলবার লেদ কারখানার কর্মী সঞ্জয়ের মেয়ের জন্ম হয়। ঠিক ছিল, বুধবার দুপুরে সত্যকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে স্ত্রী ও মেয়েকে দেখতে যাবেন। সেই মতো দুপুর আড়াইটে নাগাদ সাইকেলে চেপে বন্ধুর বাড়িতে যান তিনি।

পুলিশ জানায়, সত্যের বাড়িতে বসে যখন গল্প করছিলেন দুই বন্ধু, ঠিক তখনই দুই দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে ওই বাড়ির সামনে আসে। এর মধ্যে এক জন সরাসরি ঘরের মধ্যে ঢুকে গোবিন্দের স্ত্রী বেবি মান্নার কাছে জানতে চায় গোবিন্দ বাড়ি আছেন কি না। অন্য জন মোটরবাইক নিয়ে বাড়ির বাইরেই অপেক্ষায় ছিল। পুলিশ জানায়, গোবিন্দ ওই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। অভিযোগ, এ কথা বলতেই ওই যুবক হঠাৎ বেবিদেবীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে সঞ্জয়কে লক্ষ করে পরপর দু’টি গুলি চালায়। একটি গুলি লাগে তাঁর বুকে। আর একটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিছানাতেই লুটিয়ে পড়েন সঞ্জয়। পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলে আসে হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তা-সহ গোয়েন্দা বাহিনী।

Advertisement

ঘটনার পরে এ দিন বিকেলে কাশীপুর এলাকায় গোবিন্দ মান্নার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছানায় তখনও চাপ চাপ রক্ত।

ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী বেবিদেবী বলেন, ‘‘ছেলেটিকে কোনও দিন দেখিনি। আমার স্বামী চোলাই মদ বিক্রি করেন। অনেকেই তা কিনতে আসেন। তাই অতটা গুরুত্ব দিইনি। তবে আমার স্বামী নেই জেনেও আমাকে ধাক্কা মেরে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেল।’’

পুলিশ জানায়, গোবিন্দের বিরুদ্ধে আগে থেকেই চোলাই মদ বিক্রি, তোলাবাজি-সহ দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। কয়েকবার জেলও হয়েছে তাঁর। তাই এই খুনের পিছনে গোবিন্দের বিরোধী গোষ্ঠীর কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কিন্তু থানা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় দু’জন দুষ্কৃতী গুলি চালিয়ে পালাল কী করে?

এ নিয়ে ধন্দে খোদ পুলিশও। কারণ এলাকার খুব পরিচিত দুষ্কৃতী ছাড়া দিনেদুপুরে ওই এলাকার গলি চিনে পালিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন। তাই পুলিশের ধারণা, অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবেই ওই যুবককে খুন করা হয়েছে এবং ওই ঘটনার সঙ্গে সম্ভবত ঘনিষ্ঠ কারও যোগাযোগ রয়েছে। রাতে গোবিন্দকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন