উলুবেড়িয়ায় নিমদিঘিতে মুম্বই রোড অবরোধ কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের।
হাওড়ার সালকিয়ার প্রতিবাদী যুবক অরূপ ভাণ্ডারীকে খুনের প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় কংগ্রেসের ডাকা ১২ ঘন্টার বন্ধে বিপযর্স্ত হল জনজীবন। একই ইসুতে এ দিন বামফ্রন্টও আলাদাভাবে বন্ধের ডাক দিয়েছিল। তবে জেলার গ্রামীণ এলাকায় তুলনামূলকভাবে বন্ধ সফল করতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল কংগ্রেস। আমতা এবং উলুবেড়িয়া থেকে মোট ১৬ জন কংগ্রেসকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার পরে। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এদিন রাস্তায় বের হওয়া মানুষজনের অধিকাংশই অরূপ ভাণ্ডারীর খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তি চাইলেও সে জন্য জনজীবন বিপর্যস্ত করে বন্ধ ডাকাকে সমর্থন করেননি।
এ দিন সকাল থেকে হাওড়ার বাগনান, আন্দুল, আলমপুর, উলুবেড়িয়া, আমতা, শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, জগৎবল্লভপুর প্রভৃতি এলাকায় কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা বনধ্ সফল করতে রাস্তায় নেমে পড়েন। বাগনানে রেল অবরোধ করা হয়। সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হয়ে অবরোধ চলে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা। অবরোধের নেতৃত্ব দেন আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। বাগনানের লাইব্রেরি মোড়, উলুবেড়িয়ার নিমদিঘি এবং আলমপুরে মুম্বই রোড অবরোধ করা হয়। অবরোধ তুলতে র্যাফ আসে। উলুবেড়িয়ার নিমদিঘিতে জোর করে রাস্তা অবরোধ করার অভিযোগে আটজন কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য দিকে আমতায় জোর করে ধর্মতলা-আমতা রুটের সিটিসি বাস বন্ধ করার চেষ্টার অভিযোগে আট জন কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বাস নেই বাগনান বাসস্ট্যান্ডে।
বাগনান, আমতা, শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর আন্দুল প্রভৃতি এলাকায় বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ ছিল। অন্যদিকে সিটিসি বাস চলাচল করলেও তাতে যাত্রীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। প্রায় সর্বত্রই অটো-রিকশা এবং ট্রেকার চলাচল বন্ধ ছিল। বাগনান, আমতা প্রভৃতি এলাকায় বাসস্ট্যান্ড কার্যত খাঁ খাঁ করেছে। অধিকাংশ দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। বিভিন্ন সরকারি অফিস খোলা থাকলেও কর্মচারিরা না আসায় কাজ হয়নি। মুম্বই রোডে এ দিন অন্যদিনের তুলনায় গাড়ি চলাচলের সংখ্যাও ছিল কম। বাগনান বাসস্ট্যান্ডে বাস ধরতে আসা এক যাত্রী শ্যামল কুণ্ডু বলেন, “সালকিয়ার অরূপ ভাণ্ডারীর খুনের ঘটনায় আমরাও চাই দোষীদের কড়া শাস্তি হোক। কিন্তু সে জন্য বন্ধ না ডেকে অন্য ভাবেও আন্দোলন করা যেত। বন্ধে যে মানুষের ভোগান্তি হয় তা রাজনৈতিক দলগুলি কবে বুঝবে!”
বন্ধ বাজার। উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা।
বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, “জেলায় সর্বত্র কংগ্রেস কর্মীদের উপরে নির্দেশ ছিল তাঁরা যেন কোনও অশান্তি না করেন। তা সত্ত্বেও বিনা প্ররোচনায় ১৬ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা খুব বেশিক্ষণ রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করিনি।”
বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে এ দিন উলুবেড়িয়া, আন্দুল প্রভৃতি এলাকায় পিকেটিং করা হয়।