আমতা গণধর্ষণে মূল বিচার প্রক্রিয়া শুরু

হাওড়ার আমতার মুক্তিরচক গ্রামের দুই মহিলাকে গণধষর্ণের মামলার মূল বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করল আদালত। গত ১ জুলাই এই মামলা উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালত থেকে পাঠানো হয়েছে দায়রা আদালতে। পুলিশ জানিয়েছে, আগামী ১৫ জুলাই দায়রা বিচারকের এজলাসে আসামীদের হাজির করানো হবে। মামলার বিচার শুরু হবে ওইদিন থেকেই। যদিও এখান থেকে মামলাটি যাবে আমতা আদালতে দায়রা বিচারকের এজলাসে। সেখানে মামলার টানা শুনানি চলবে। ইতিমধ্যেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত শেষ।

Advertisement

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০১:০৫
Share:

হাওড়ার আমতার মুক্তিরচক গ্রামের দুই মহিলাকে গণধষর্ণের মামলার মূল বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করল আদালত। গত ১ জুলাই এই মামলা উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালত থেকে পাঠানো হয়েছে দায়রা আদালতে। পুলিশ জানিয়েছে, আগামী ১৫ জুলাই দায়রা বিচারকের এজলাসে আসামীদের হাজির করানো হবে। মামলার বিচার শুরু হবে ওইদিন থেকেই। যদিও এখান থেকে মামলাটি যাবে আমতা আদালতে দায়রা বিচারকের এজলাসে। সেখানে মামলার টানা শুনানি চলবে। ইতিমধ্যেই আদালতে চার্জশিট জমা দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত শেষ। শুনানি চলাকালীন চার্জশিটে উল্লেখ করা সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করতে তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না বলেও দাবি করেছেন হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ কর্তারা।

Advertisement

গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে। এই মামলায় অভিযুক্তের সংখ্যা ১০ জন। তাদের মধ্যে ৯ জনকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। একজন ফেরার। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশে আমতার সিআই-কে তদন্তকারী অফিসার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। তদন্তের সামগ্রিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় উলুবেড়িয়ার এসডিপিও-কে। ঘটনার ৯০ দিনের মধ্যে ২৬ এপ্রিল পুলিশ মামলার চার্জশিট দেয়। আসামীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৪৪৮, ৪২৭, ৩৪২, ৩২৩, ৩২৫, ৫০৬, ৩৭৯, ৩৭৬ - ডি এবং ১২০বি ধারায় গণধর্ষণ, লুঠপাট এবং মারধরের মামলা রুজু করে তদন্ত হয়েছে বলে হাওড়া জেলা গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। চার্জশিটেও সেই ধারাগুলি বহাল রাখা হয়েছে বলে জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তা জানিয়ছেন।

মুক্তিরচক গ্রামে ওই ঘটনায় এক গৃহবধূ ও তাঁর জেঠিশাশুড়িকে তাঁদের নিজেদের বাড়িতে গণধর্ষণ করা হয়। দুই মহিলার পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তরা রাতে দল বেঁধে বাড়িতে ঢোকে। মারধর করে তাঁদের গণধর্ষণ করে। ওই কাণ্ড ঘটাতে আগে থেকেই অভিযুক্তরা মেন সুইচ অফ করে গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ চ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তাঁর শাশুড়ি কোনওমতে দুষ্কৃতীদের হাত ছাড়িয়ে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে খবর দেন। সেখান থেকে খবর যায় আমতা থানায়। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেফতার করে। মূল অভিযুক্ত বরুণ মাখাল গ্রেফতার হয় ঘটনার কয়েকদিন পরে। পরে বিচারকের কাছে দেওয়া দুই মহিলার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে রণজিৎ মণ্ডল নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চার্জশিটে পুলিশ বরুণ এবং রণজিৎ দু’জনকেই ঘটনার মূল পাণ্ডা বলে উল্লেখ করেছে।

Advertisement

এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন ওই গ্রামে যায়। বরুণ ও রণজিৎ তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা বলে পরিচিত। এই অবস্থায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলে বিরোধেীরা। যদিও তৃণমূলের তরফে ঘটনার পরেই জানানো হয়, আইন তার নিজের পথে চলবে। দোষী হলে কেউই ছাড় পাবে না।

এদিকে, গুরুতর আহত অবস্থায় দুই মহিলা অন্তত একমাস উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাঁদের পরিবারের তরফে আদালতে অভিযোগ করা হয় যে কয়েক জন অভিযুক্ত এখনও গ্রেফতার হয়নি, তারা হুমকি দিচ্ছে। ফলে নির্যাতিতা দুই মহিলা গ্রামে ফিরতে পারছেন না। আদালত ওই দুই মহিলার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়। যদিও পুলিশের দাবি, ঘটনার দিন থেকেই ওই দুই মহিলার বাড়িতে পুলিশ প্রহরা রয়েছে। দুই মহিলা এখন গ্রামেই রয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement