উঠছে না দাম, আলুর বেশি ফলনে মাথায় হাত চাষির

একদিকে আলুর ফলন বেশি হওয়া, অন্যদিকে তা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। চিত্রটি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের। বাধ্য হয়ে চাষিরা কম দামে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে তাঁরা নিজেরাই জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০১:১৫
Share:

মাঠ থেকেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে আলু। উদয়নারায়ণপুরে নিজস্ব চিত্র।

একদিকে আলুর ফলন বেশি হওয়া, অন্যদিকে তা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। চিত্রটি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের। বাধ্য হয়ে চাষিরা কম দামে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে তাঁরা নিজেরাই জানিয়েছেন।

Advertisement

উদয়নারায়ণপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় আলু চাষ হয়। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এই মরশুমে চার হাজার একশো হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। কয়েকদিন ধরে আলু তোলা শুরু করেছেন চাষিরা। এখনও পর্যন্ত প্রায় চল্লিশ শতাংশ জমি থেকে আলু তোলা হয়ে গিয়েছে। ফলনের যে প্রাথমিক হিসাব মিলেছে তাতে দেখা যাচ্ছে এই মরশুমে হেক্টর প্রতি সাড়ে সাতশো বস্তা (একেকটি বস্তায় আলু থাকে ৫০ কিলোগ্রাম) করে আলু উত্‌পাদিত হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ উত্‌পাদিত আলু মজুত করার জন্য প্রয়োজনীয় হিমঘরের অভাব রয়েছে উদয়নারায়ণপুরে। চাষিদের দাবি, এই মরশুমে অন্তত ৩০ লক্ষ বস্তা আলু উত্‌পাদিত হবে। কিন্তু যে তিনটি হিমঘর রয়েছে তাতে মেরেকেটে ১০ লক্ষ বস্তা আলু সংরক্ষণ করা যেতে পারে। হিমঘরগুলি ইতিমধ্যেই আলু মজুত করতে শুরু করেছে বলে হিমঘর মালিকেরা জানিয়েছেন।

শুধু উদয়নারায়ণপুরের চাষিরাই নন, হুগলি, বর্ধমান এবং হাওড়ারই জয়পুরের চাষিরাও এই তিনটি হিমঘরে সংরক্ষণ করার জন্য আলু নিয়ে আসছেন। যেসব চাষি আগে আলু আনছেন তাঁরা আগে তা মজুত করতে পারছেন। কিন্তু পরবর্তীকালে আলুর যোগানের তুলনায় হিমঘরে জায়গা কমে যাওয়ায় আলুর দাম দ্রুত কমতে শুরু করেছে। চাষিরা কম দামেই আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি উদয়নারায়ণপুরে গিয়ে দেখা গেল, পোখরাজ আলু বিকোচ্ছে বস্তাপিছু ১১০-১৩০ টাকা করে। জ্যোতি আলু বিকোচ্ছে বস্তাপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা করে। চন্দ্রমুখী বিক্রি হচ্ছে বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা করে। এইভাবে কম দামে আলু বিক্রি হওয়ায় বিঘা প্রতি তাঁদের অন্তত দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সরকার নিজেই নুন্যতম সহায়ক মূল্যে আলু কিনুক, নয়ত অন্য রাজ্যে আলু রফতানির অনমতি দিক। এই দাবিতে চাষিরা ব্লক প্রশাসনের কাছে একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানান। উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, “চাষিদের দাম না পাওয়াটা সমস্যার। আশা করি সরকার এ বিষয়ে প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেবে।” রাজ্যের কৃষি বিপননমন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ডেকেছেন। সরকার আলু চাষিদের নিয়ে ভাবছে। ঘাবড়ানোর কিছু ব্যাপার নেই।”

Advertisement

সরকার কবে ব্যবস্থা নেয় সে দিকেই এখন তাকিয়ে আছেন চাষিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement