কুকুর নিয়ে বচসার জেরে পড়শিকে খুন

রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে কুকুরের ডাক শুনলেই মাথায় রক্ত চড়ে যেত শম্ভু বাগের। কিন্তু সেই রাগ মেটাতে তিনি যে কুকুরপ্রেমী এক প্রতিবেশীকে খুন করবেন, এটা ভাবতেও পারেননি হাওড়া বাকসাড়ার বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০১:১৩
Share:

বাণেশ্বর সাউ।

রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে কুকুরের ডাক শুনলেই মাথায় রক্ত চড়ে যেত শম্ভু বাগের। কিন্তু সেই রাগ মেটাতে তিনি যে কুকুরপ্রেমী এক প্রতিবেশীকে খুন করবেন, এটা ভাবতেও পারেননি হাওড়া বাকসাড়ার বাসিন্দারা।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ১১টা নাগাদ পাড়ার কুকুরদের খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে বাকসাড়ার বাসিন্দা বাণেশ্বর সাউয়ের সঙ্গে বচসা বাধে শম্ভুর। এর পরেই তাঁকে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করেন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন বাণেশ্বর। হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খুনের অভিযোগে শম্ভুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জেরায় শম্ভু পুলিশকে জানিয়েছেন, রাগের মাথাতেই তিনি বাণেশ্বরকে মারেন। তবে তিনি খুন করতে চাননি। বৃহস্পতিবার তাঁকে হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়।

রাস্তার কুকুর নিয়ে বচসার জেরে এমন ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকার লোকজন। তবে হাওড়ায় এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। গত ১৯ মে হাওড়ার রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডে একটি পায়রা নিয়ে বচসার জেরে খুন হয়েছিলেন এক ব্যক্তি।

Advertisement

হাওড়ার বাকসাড়ায় খুনের ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসীর জটলা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাওড়া জুটমিলের কর্মী বাণেশ্বর এলাকায় কুকুরপ্রেমী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। রোজ সকালে কাজে যাওয়ার আগে এবং রাতে বাড়ি ফিরে এলাকার কুকুরদের খাওয়াতেন। এলাকার কোনও কুকুর অসুস্থ বা জখম হলে তাদের পরিচর্যাও করতেন। উল্টো দিকে স্থানীয় একটি কারখানার কর্মী শম্ভুর কাছে কুকুরেরা ছিল রীতিমতো আতঙ্ক। এক বাসিন্দা জানান, রোজই রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে শম্ভুকে দেখে কুকুরগুলি চিৎকার জুড়ত। তাতেই খেপে যেতেন তিনি। “তবে সেই রাগ যে শম্ভু এ ভাবে মেটাবেন, তা ভাবতে পারছি না।”—বললেন ওই বাসিন্দা। কয়েক জন বাসিন্দা জানান, শম্ভু মাঝেমধ্যে মত্ত অবস্থায় পাড়ায় গোলমাল জুড়লেও মারপিট করত না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মন্দিরের সামনে কেন কুকুরদের খাওয়ানো হচ্ছে, বুধবার রাতে এ নিয়েই শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, এর পরেই বাণেশ্বরকে টেনে নিয়ে গিয়ে কোনও ভারী জিনিস দিয়ে তাঁর মাথা ও গায়ে মারেন শম্ভু। তাতেই লুটিয়ে পড়েন বাণেশ্বর। বাণেশ্বরের স্ত্রী রিনা সাউয়ের অভিযোগ, এর আগেও কুকুর খাওয়ানো নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে বচসা হয় শম্ভুর। এ দিন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু ঘটনার পরেই শম্ভু ও তাঁর পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। রাতে বাকসাড়া এলাকাতেই শম্ভুর শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন