পাঁচারুল-সিমটি মোড়ের কাছে রাস্তার অবস্থা।—নিজস্ব চিত্র।
খানাখন্দে ভরা রাস্তা। তার উপর বৃষ্টিতে অবস্থা আরও শোচনীয়। কারণ গর্তের গভীরতা বোঝার উপায় থাকে না। একের পর এক বর্ষা গেলেও পাঁচ বছর ধরে উদয়নারায়ণপুরের পাঁচারুল সিংটি মোড়ের রাস্তার ছবিটা বদলায়নি। এলাকার মানুষের অভিযোগ, রাস্তার এমন শোচনীয় দশা, কিন্তু প্রশাসনের কারও কোনও নজরই নেই। যদিও প্রশাসনের দাবি, রাস্তার খারাপ অবস্থা নিয়ে তাঁরা ওয়াকিবহাল। শীঘ্রই মেরামতির কাজ শুরু হয়ে যাবে। এ জন্য টাকাও বরাদ্দ হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে পূর্ত দফতরের তত্ত্বাবধানে এক বার এই রাস্তা মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর কাটতে না কাটতেই রাস্তার পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে ইটের খোয়া। গোটা রাস্তা জুড়েই তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। তার উপর দু’বারহ বন্যার জল বয়ে গিয়েছে এই রাস্তার উপর দিয়ে। ফলে রাস্তার দূরবস্থা আরও বেড়েছে। খানাখন্দের পথে বিপদের আশঙ্কা মাথায় নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। চলছে বাস, ট্রেকার থেকে ভ্যানরিকশা, মোটরবাইক, ট্রাক সব। ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। সিংটি, পাঁচারুল, চব্বিশপুর, বলাইচক, মালঞ্চ-সহ অন্তত১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ নিত্য এই পথে যাতায়াত করেন। রাস্তার পাশেই রয়েছে পাঁচারুলের দু’টি হাইস্কুল ও একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্যাঙ্ক, পঞ্চায়েত অফিস, ব্লক কৃষি খামার। রাস্তার অবস্থার জন্য মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
পাঁচরুল শ্রীহরি বিদ্যামন্দিরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুভাষ পোড়েল, গড় ভবানীপুরের বাসিন্দা নিমাই আদক বলেন, “প্রায় চার বছর ধরে রাস্তাটি ভাঙাচোরা হয়ে আছে। কিন্তু রাস্তা ঠিক করার ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুধু পথচারি নয়। এই রাস্তায় রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় বিশেষ করে প্রসূতিদের নিয়ে যেতে হয় অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। যানচালকদের অভিযোগ, রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে গাড়ির যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এতে লোকসান বাড়ছে। এমন চলতে থাকলে গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
সিংটি পঞ্চায়েতের প্রধান তন্ময় পাখিরা বলেন, ‘‘রাস্তা সারানোর জন্য জেলা পরিষদকে জানিয়েছি।” হাওড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণ ঘোষের বক্তব্য, “দু’বার বন্যার জল বয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এত বড় রাস্তা সারানোর টাকা আমাদের কাছে নেই। তাই উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজার উদ্যোগে রাস্তা সারানোর বাপারে চেষ্টা চলছে।” সমীরবাবু বলেন, “সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি ২০০৭ সালে জেলা পরিষদ পূর্ত দফতরকে হস্তান্তরিত করে। কিন্তু পূর্ত দফতর তা মানতে না চেয়ে রাস্তাটি মেরামত করতে রাজি হয়নি। তার ফলেই জটিলতা সৃষ্টি হয়। তবে সেই সমস্যা এখন মিটে গিয়েছে। রাস্তা মেরামত করানোর জন্য ৫ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজও শুরু হয়ে যাবে।”