ছাদের জল আটকাতে টাঙানো হয়েছে পলিথিন। ছবি: তাপস ঘোষ।
কোথাও গণ্ডগোলের খবর এলেই তাঁদের ছুটতে হয়। সেখান থেকে ফাঁড়িতে ফেরার পরেই হয়তো আবার কোথাও গোলমাল থামাতে বেরিয়ে যেতে হয়। দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনির পরে রাতে যদি বা ফাঁড়িতে বিশ্রামের সুযোগ মেলে কিন্তু সেখানকার অবস্থাও তথৈবচ। দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বর্ষায় ছাদ থেকে জলের ধারা বর্ষণ। গোটা ফাঁড়ির পরিবেশটাই অস্বাস্থ্যকর।
হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া থানার অন্তর্গত ধরমপুর পুলিশ ফাঁড়ি। শহরে ঢোকার মুখে জিটি রোডের ধারে খাদিনা মোড়ে দোতলা বাড়িটি যে কারও চোখে পড়বে। বাইরে থেকে দেখলে ভিতরের খারাপ অবস্থাটা সহজে অনুমান করা যাবে না। বহু বছরের পুরনো এই ফাঁড়ি নানা ঘটনার সাক্ষী। গুরুত্বের দিক থেকে ধরমপুর ফাঁড়ির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ফাঁড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে চুঁচুড়া থানা। পথচলতি মানুষ, যানবাহন কোনও দুর্ঘটনায় পড়লে বা স্থানীয় বাসিন্দারা কোনও বিপদে পড়লে চুঁচুড়া থানায় যাওয়ার আগে এই ফাঁড়িতেই আসেন। অথবা কোনও খবর পেলে এই ফাঁড়ি থেকেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশকর্মীরা।
কিন্তু ফাঁড়ির অবস্থা যেরকম শোচনীয় তাতে সেখানকার পুলিশকর্মীরাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। দোতলা বাড়ির ওপরের তলায় থাকেন পাঁচ পুলিশকর্মী। সেখানে গিয়ে দেখা গেলে দেওয়ালে ড্যাম্প লেগেছে। এ দিক ওদিক পলেস্তারা খসে পড়ার চিহ্ন। চারদিকে বিপজ্জনকভাবে জড়াজনি করে রয়েছে বিদ্যুতের তার। একটা জায়গায় বিছানার উপরে টাঙিয়ে রাখা হয়েছে পলিথিনের চাদর। সেদিকে তাকাতেই এক পুলিশকর্মী জানালেন, বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কার না হওয়ায় ছাদ ফেটে দল পড়ে। বিছানা ভিজে যায়। তা আটকাতেই এই ব্যবস্থা। একতলায় ঢুকতেই প্রথমে রয়েছে ডেপুটি পুলিশ সুপারের (ট্রাফিক) শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অফিস। তবে তা দেখে ওপরের অবস্থাটা আন্দাজ করা কঠিন। সংস্কারের প্রশ্নে ওই পুলিশকর্মীদের বক্তব্য, ঊর্ধ্বতন কর্তারা সবই জানেন। তার পরেও কেন সংস্কার করা হচ্ছে না তা জানা নেই। তবে ঘরের যা অবস্থা তাতে প্রতিমূহূর্তে যে তাঁদের আতঙ্কে বাস করতে হচ্ছে তা জানাতে ভুললেন না। জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওই ফাঁড়ির যে এমন শোচনীয় অবস্থা তা জানা ছিল না। শীঘ্র যাতে ওই ফাঁড়ির সংস্কার কাজ শুরু হয় তার ব্যবস্থা করা হবে।”