জনস্বার্থে ঘড়ির মাঠকে খেলার মাঠ হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে উত্তরপাড়ায়। ‘ঘড়িবাড়ি বাঁচাও কমিটি’র উদ্যোগে ওই বিক্ষোভ মঙ্গলবার তিন দিনে পড়ল। স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, এক শ্রেণির প্রোমোটার ঘুরপথে ওই মাঠ দখল করে নিয়েছে। এলাকার ফাঁকা জমি প্রতিদিন কমছে। এ বিষয়ে পুরসভার জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন স্থানীয়েরা। উত্তরপাড়ার জমিদারবাড়ি ‘ঘড়িবাড়ি’ বাম আমলেই ভেঙে আবাসন হয়ে গিয়েছে। সেখানে ‘রাজবাড়ি’ নামটি ছাড়া ওই আবাসনে পুরনো আর কিছুরই অস্তিত্ব নেই। এত দিন ওই আবাসনের গা-ঘেঁষে থাকা জমিদার আমলের মাঠটিতে এলাকার কয়েকটি ক্লাবের ছেলেরা নিয়মিত খেলাধুলো করত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত নানা সংগঠনের উদ্যোগে।
দিন কয়েক আগে ওই মাঠে ১৪৪ ধারা জারি হয়। মাঠটি পুলিশের উপস্থিতিতে প্রোমোটারেরা ঘিরে ফেলে। তারপর থেকেই এলাকার ক্লাবের ছেলেরা আর ওই মাঠে খেলতে পারছেন না। মাঠটি বাঁচাতে এলাকার নাগরিকদের নিয়ে তৈরি হয় ‘ঘড়িবাড়ি মাঠ বাঁচাও কমিটি’। কমিটির উদ্যোগে জেলাশাসক মনমীত নন্দা এবং পুর কর্তৃপক্ষের কাছে মাঠটি রক্ষার জন্য আবেদন করা হয়।
ওই কমিটির পক্ষে কৌশিক বর্মন বলেন, “আমরা আতঙ্কিত এই ভেবে যে প্রোমোটারেরা মাঠটিতে নির্মাণ না শুরু করে দেয়। মাঠের মধ্যে টিন দিয়ে আস্থায়ী ঘর তৈরি করে নেওয়া হয়েছে। প্রোমোটারের লোক সেখানে সর্বক্ষণ প্রহরায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের এখনই কিছু করা জরুরি।” কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক তুহিন বসু বলেন, “মাঠ বাঁচাতে আমরা যতদূর যেতে হয় যাব। আইন অনুযায়ী এখন কেউ গাছ কাটতে পারেন না। কিন্তু ওই নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে। আমরা বিষয়টি পুরসভা এবং প্রশাসনের নজরে এনেছি।” প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ওই জমির কাগজপত্র অনুযায়ী সেখানে গাছ ছাড়াও অন্তত তিনটি জলাভূমি রয়েছে। আইন অনুয়ায়ী সেই জলা ভূমি ভরাটের কোনও জায়গা নেই। কেউ জলাভূমি বোজালে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “এখন ওই ঘড়িবাড়ি মাঠটির জমিটির চরিত্র নির্ণয়ের কাজ করা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের তরফে। দেখা হচ্ছে, ওই জমির যে সব গাছ কাটা হয়েছে তার কোনও অনুমতি পুরসভার তরফে প্রোমোটারকে দেওয়া হয়েছে কি না।”