চুরির অভিযোগে গণপিটুনি, জাঙ্গিপাড়ায় মৃত্যু দু’জনের

চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল দুই যুবকের। রবিবার গভীর রাতে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার রাধানগর পঞ্চায়েতের বসন্তপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম সফিকুল রহমান (২২) এবং সারাফুল মল্লিক (২০)। সফিকুল হরিপালের পূর্ব মল্লিকপুরে থাকত। সারাফুলের বাড়ি জাঙ্গিপাড়ার বেলপাড়ায়। সোমবার সকালে দেহ দু’টি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে একটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জাঙ্গিপাড়া শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০২:৩১
Share:

চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল দুই যুবকের। রবিবার গভীর রাতে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার রাধানগর পঞ্চায়েতের বসন্তপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম সফিকুল রহমান (২২) এবং সারাফুল মল্লিক (২০)। সফিকুল হরিপালের পূর্ব মল্লিকপুরে থাকত। সারাফুলের বাড়ি জাঙ্গিপাড়ার বেলপাড়ায়। সোমবার সকালে দেহ দু’টি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে একটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আইন হাতে তুলে নিয়ে গ্রামবাসীরা ঠিক করেননি। গণপিটুনি না দিয়ে ওই দু’জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত ছিল।” গণপিটুনিতে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন এসডিপিও (শ্রীরামপুর) অর্ণব বিশ্বাস।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ জনা ছয়েক দুষ্কৃতী বসন্তপুরের পাশের গ্রাম মোহনপুরে চড়াও হয়। সেখানকার একটি বাড়ির সদস্যেরা কর্মসূত্রে অন্যত্র থাকেন। অভিযোগ, তালা ভেঙে সেই বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা জিনিসপত্র, গয়না এবং নগদ টাকা হাতায়। তার পরে রাত ২টো নাগাদ বসন্তপুরে ঢোকে। গ্রামবাসীদের মধ্যে কেউ তা টের পান। কিছু ক্ষণের মধ্যেই মোবাইলে সেই খবর ছড়ায়। লোকজন বেরিয়ে পড়েন। বেগতিক বুঝে দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করে। গ্রামবাসীরা তাদের পিছনে ধাওয়া করে। চার দুষ্কৃতী কোনওক্রমে পালালেও সফিকুল এবং সারাফুল ধরা পড়ে যায়। শুরু হয় মার। প্রথমে কিল, চড়, ঘুষি, তার পরে দু’জনকে মাটিতে ফেলে রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু। দেহ রাস্তায় ফেলে রেখে গ্রামবাসীরা বাড়ি ফিরে যান। সোমবার সকালে দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠান জাঙ্গিপাড়া থানার ওসি স্বপন ঠাকুর।

Advertisement

তদন্তকারীদের অনুমান, যে বাড়িতে কেউ নেই, সেগুলোই ওই দলটির নিশানা। খোঁজখবর নিয়েই তারা এলাকায় ঢুকেছিল। আলমারি ভাঙার বিভিন্ন সরঞ্জাম তাদের সঙ্গে ছিল। রবিবারের ঘটনা নিয়ে গ্রামবাসীরা মুখ খুলতে চাননি। তাঁদের অভিযোগ, কিছু দিন ধরেই জাঙ্গিপাড়ায় বেশ কয়েকটি জায়গায় চুরি হচ্ছিল। পুলিশে জানানো হলেও কাজ হয়নি। পুলিশের উপর তাঁরা আস্থা হারাচ্ছিলেন। ওই রাতে দুষ্কৃতীরা শাবল, ভোজালি-সহ নানা জিনিস নিয়ে ঢুকেছে জানতে পেরেই বহু মানুষ বেরিয়ে আসেন। তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শেখ মহিউদ্দিন বলেন, “গত দু-তিন মাস ধরে আমাদের গ্রাম-সহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি বাড়ছিল। থানায় অভিযোগও জানানো হয়। রবিবার দুজন চুরি করতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়।”

পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানেনি। পুলিশের দাবি, রাতে টহলদারি ভ্যান বিভিন্ন এলাকায় ঘোরে। কয়েকটি চুরির ঘটনায় দুষ্কৃতীরা ধরা পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন