দোলা-শোভনের লড়াইয়ে পর্যুদস্ত আইএনটিটিইউসি

শ্রমিক সংগঠনে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিণতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল দিল শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিলের প্রভিডেন্ট ফান্ড ট্রাস্টি নির্বাচনের ফলাফল। পাঁচটির মধ্যে একটি আসনও আইএনটিটিইউসি-র বরাতে জুটল না। জুটমিল সূত্রের খবর, ওই ভোটে তৃণণূল প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি-র তরফে পৃথক দু’টি প্রার্থী-প্যানেল জমা দেওয়া হয়েছিল। এদের একটি গোষ্ঠী দোলা সেন ও অন্য গোষ্ঠী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। রবিবার দু’টি প্যানেলের প্রার্থীরাই হেরেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪২
Share:

শ্রমিক সংগঠনে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিণতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল দিল শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিলের প্রভিডেন্ট ফান্ড ট্রাস্টি নির্বাচনের ফলাফল। পাঁচটির মধ্যে একটি আসনও আইএনটিটিইউসি-র বরাতে জুটল না।

Advertisement

জুটমিল সূত্রের খবর, ওই ভোটে তৃণণূল প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি-র তরফে পৃথক দু’টি প্রার্থী-প্যানেল জমা দেওয়া হয়েছিল। এদের একটি গোষ্ঠী দোলা সেন ও অন্য গোষ্ঠী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। রবিবার দু’টি প্যানেলের প্রার্থীরাই হেরেছেন। সিপিএম প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন সিটু চারটি ও কংগ্রেস প্রভাবিত রাষ্ট্রীয় চটকল মজদুর ইউনিয়ন (আরসিএমইউ) একটি আসন দখ‌ল করেছে। শেষ বার, ২০০৬ সালের নির্বাচনে তারাই জয়ী হয়েছিল।

হুগলির ওই মিলে এ বার ন’টি শ্রমিক সংগঠন প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। তার মধ্যে আইএনটিটিইউসি-রই দু’টি প্যানেল জমা পড়ে। ৪,৮৫৬ জন ভোটারের মধ্যে ৩,২৮৬ জন ভোট দেন। রাতে ফল বেরোলে দেখা যায় তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর প্রার্থীরাই পর্যুদস্ত হয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে। দুই গোষ্ঠীর নেতারাই একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন।

Advertisement

আইএনটিটিইউসি-র জেলা নেতা, দোলা সেনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিদ্যুৎ রাউতের ব্যাখ্যা, “ওই মিলে পিএফ নির্বাচনে এই প্রথম আমরা লড়াই করলাম। সিটুর তুলনায় প্রচারের কৌশলে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে ছিলাম। তা সত্ত্বেও আমরা দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছি। পরের বার এটা হবে না।” তবে শ্রীরামপুরের এক তৃণমূল নেতার মতে, “দুই গোষ্ঠীর প্রচার, লড়াইতে শ্রমিকেরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। তাই তাঁরা আমাদের পাশে দাঁড়াননি। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া হাতে এর মোকাবিলা করুন।’’ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বিদ্যুৎবাবুও অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের একটা দ্বিতীয় পক্ষ দাঁড়িয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় প্যানেলের প্রার্থীরা নবম স্থানে শেষ করেছে। না হলে ফল অন্য রকম হত। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন।’’ শোভনদেব-অনুগামী তৃণমূল নেতা কাবুল মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘দলনেত্রী চটকলের আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন শোভনদাকে সামনে রেখে। দলেরই এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী নেতার জন্য সংগঠনের ক্ষতি হচ্ছে। এঁদের ঔদ্ধত্যের কারণেই ইন্ডিয়া জুটে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন ক্ষমতা দখল করল।” রাতে শোভনদেবও বলেন, “ওখানে আমাদের সংগঠন বহু পুরনো। তৃণমূলের নাম দিয়ে পরে অন্য সংগঠন হয়েছে। এতে স্বভাবতই শ্রমিকদের আস্থার অভাব হচ্ছে। এতে ভাল বার্তা যাচ্ছে না।” চেষ্টা করেও দোলার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। সিটু অবশ্য দাবি করছে, এটা তাদের নৈতিক জয়। সংগঠনের নেতা সুমঙ্গল সিংহের মতে, “কেন্দ্র যখন প্রতিদিন চটজাত দ্রব্যের বরাত কমাচ্ছে, সব শ্রমিক সংগঠনকে পাশে নিয়ে রাজ্যের যে প্রতিবাদী ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল, তা তারা করছে না। তাই আইএনটিটিইউসি-কে শ্রমিকেরা বর্জন করেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন