প্রশাসন নিস্পৃহ, অভিযোগ

দেহ উদ্ধারে ডুবুরির দাবিতে অবরোধে পুলিশের লাঠি

স্নান করতে নেমে এক যুবক গঙ্গায় তলিয়ে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পরেও ডুবুরি না আসায় দফায় দফায় জিটি রোড অবরোধ করলেন ক্ষিপ্ত মানুষজন। অবরোধ তুলতে লাঠিচার্জ করতে হল পুলিশকে। এলাকাবাসীর দাবি নিয়ে কথা বলতে প্রশাসনের কোনও অফিসারকে অবশ্য ধারেকাছে দেখা গেল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৬
Share:

অবরোধকারীদের হটিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।

স্নান করতে নেমে এক যুবক গঙ্গায় তলিয়ে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পরেও ডুবুরি না আসায় দফায় দফায় জিটি রোড অবরোধ করলেন ক্ষিপ্ত মানুষজন। অবরোধ তুলতে লাঠিচার্জ করতে হল পুলিশকে। এলাকাবাসীর দাবি নিয়ে কথা বলতে প্রশাসনের কোনও অফিসারকে অবশ্য ধারেকাছে দেখা গেল না। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের খটিরবাজার এলাকায়। পুলিশ অবশ্য লাঠিচালনার কথা অস্বীকার করেছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ অমর প্রধান নামে ওই এলাকারই বছর চব্বিশের এক যুবক বন্ধুর সঙ্গে স্থানীয় সুরকি ঘাটে স্নান করতে যান। তার পরেই ওই ঘটনা। ওই যুবকের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ আসে। থানার মাধ্যমে প্রশাসনিক দফতরে ডুবুরি পাঠানোর আবেদন জানানো হয়। কিন্তু প্রশাসন আদপেই এ নিয়ে উদ্যোগী হয়নি। স্থানীয় যুবকরাই নৌকো নিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। এলাকার লোক ভেবেছিলেন, মঙ্গলবার ডুবুরি আসবে। কিন্তু তা হয়নি। পুলিশই স্থানীয় কিছু ছেলেকে জোগাড় করে জলে নামায়। জনতা তা মানতে পারেনি। তাঁরা প্রশিক্ষিত ডুবুরির দাবি জানাতে থাকে।

এক সময় জনতার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ খটিরবাজারে জিটি রোড অবরোধ করে তাঁরা। বেলা দু’টো নাগাদ পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ফের অবরোধ করা হয়। অভিযোগ, সেই সময় ঘটনাস্থলে গুটিকতক পুলিশকর্মীকে দেখে বিক্ষোভকারীদের কয়েক জন কার্যত তাড়া করে। ওই পুলিশকর্মীরা সরে যান। এর পরেই বেলা ৩টে নাগাদ শ্রীরামপুর থানার আইসি প্রিয়ব্রত বক্সি বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা ইট ছোড়ে বলে পুলিশের অভিযোগ। পরে ঘটনাস্থলে আসেন এসডিপিও অর্ণব বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ওই যুবকের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। ডুবুরির জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

Advertisement


ডুবুরির দাবিতে অবরোধ। শ্রীরামপুরে।

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তাপস মিত্র ঘটনার পর থেকে ওই যুবককে খোঁজার কাজে তদারকি করছেন। তাঁর ক্ষোভ, “প্রশাসনকে অনুনয়-বিনয় করেছি ডুবুরি নামানোর জন্য। কিন্তু কিছুই হল না। খুব খারাপ লাগছে।” স্থানীয় প্রশাসন কতটা উদ্যোগী হয়েছে মহকুমাশাসক মৃণালকান্তি হালদারের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “বৈঠকে ব্যস্ত ছিলাম। তবে ঘটনার কথা শোনামাত্র জেলায় বিষয়টি জানিয়ে দিই।” অর্থাৎ মহকুমা প্রশাসনের তরফে কলকাতায় সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগই করা হয়নি। পুলিশ সূত্রের অবশ্য দাবি, তাদের তরফে সেই চেষ্টা করা হয়েছে।

নিখোঁজ যুবকের পরিবারের অভিযোগ, বার বার বলা সত্ত্বেও ডুবুরির ব্যবস্থা না হওয়াতেই এলাকার লোক ক্ষুব্ধ হয়ে অবরোধে নামেন। পুলিশ অকারণেই লাঠি চালিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “সংশ্লিষ্ট সব দফতরে ডুবুরির জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে পুলিশের তরফে। সাঁতারে দক্ষ ছেলেদের নামানো হয়েছে। কিন্তু পাড় থেকে ঢিল ছুড়ে তাদের কাজে বাধা দেওয়া হয়। পুলিশকর্মীদের তাড়া করা, ঢিল ছোড়া হয়। তাই লাঠি উঁঁচিয়ে তাড়া করে অবরোধ তোলা হয়েছে। লাঠিচার্জ করা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন