পুজোর মুখে ঢেলে সাজা হচ্ছে চুঁচুড়ার ঐতিহাসিক ৭টি ঘাট

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার দেড়শো বছর পার হতে যাচ্ছে। তাই পুজোর মুখে নতুন সাজে সাজছে চুঁচুড়ার ঐতিহাসিক গঙ্গার ঘাটগুলো। গঙ্গা অ্যাকশান প্ল্যান (গ্যাপ) প্রকল্পের আওতায় কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডি এ) অন্তত ২২ কোটি টাকা ব্যায়ে ওই কাজ হচ্ছে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৬
Share:

আলো লাগানো হয়েছে প্রতাপপুর ময়ূরপঙ্খী ঘাটে। ছবি: তাপস ঘোষ।

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার দেড়শো বছর পার হতে যাচ্ছে। তাই পুজোর মুখে নতুন সাজে সাজছে চুঁচুড়ার ঐতিহাসিক গঙ্গার ঘাটগুলো।

Advertisement

গঙ্গা অ্যাকশান প্ল্যান (গ্যাপ) প্রকল্পের আওতায় কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডি এ) অন্তত ২২ কোটি টাকা ব্যায়ে ওই কাজ হচ্ছে। জেলা সদর চুঁচুড়ার মোট ৬টি গঙ্গার ঘাটকে ঢেলে সাজা হচ্ছে নতুন করে। সেই সঙ্গে আরও কিছু ঘাটের সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে পার্ক, আলোকসজ্জা থাকছে ঘাটগুলিতে। সেখানকার অনেক ঘাটের সঙ্গে যেমন ইতিহাস জড়িয়ে আছে তেমনিই রয়েছে মনিষীদের স্মৃতি। স্মারক হিসেবে সেই সব মনিষীদের মূর্তিও বসানো হবে গঙ্গা লাগোয়া পার্কে।

সূত্রের খবর, প্রতিটি গঙ্গার ঘাট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এতদিন নানা অসুবিধা ছিল নাগরিকদের। সেই সব দূর করতে প্রকল্পটিতে অনেক নতুন নতুন বিষয় যোগ করা হচ্ছে। যাতে মানুষজনকে যতটা সম্ভব সাচ্ছন্দ্য দেওয়া যায়। সব ঘাটে মেয়েদের পোষাক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এতদিন ছিল না। ব্যবস্থা ছিল না প্রতিটি ঘাটে শৌচাগারেরও। তার ফলে গঙ্গায় স্নান করতে এসে অসুবিধায় পড়েতেন মহিলারা। আবার বেশ কয়েকটি ঘাটে প্রথাগতভাবে প্রতিমা ভাসান দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে কোনও র্যাম্পের ব্যবস্থা ছিল না। এতদিন ঠাকুর ভাসান দেওয়ার সময় কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হত প্রতিমা। যা বেশ কষ্ট সাধ্য ছিল। নতুন ব্যবস্থায় সেইসব অসুবিধা দূর হবে।

Advertisement

নতুন সাজে

• ষণ্ডেশ্বরতলা ঘাট

• দত্তঘাট

• মহসিন কলেজ ঘাট বা ঘণ্টা ঘাট

• প্রতাপপুর ঘাট

• বাবুগঞ্জ ঘাট

• বকুলতলা ঘাট

• তুলাপট্টি ঘাট

কে এম ডি এর এক পদস্থ কর্তা বলেন,“চুঁচুড়ার ঘাটগুলিকে পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। অনেক সময় হয়তো আগের প্রকল্পে যা ছিল না পরবর্তী সময়ে আরও নিখুঁত করার জন্য অনেক কিছুই যোগ করা হচ্ছে। পুরো কাজে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।” প্রশাসন সূত্রের খবরর, চুঁচুড়ার ষন্ডেশ্বর তলা ঘাট, দত্তঘাট, মহসিন কলেজ ঘাট যেটি স্থানীয় ঘন্টা ঘাট নামে পরিচিত। এছাড়াও হুগলি লাগোয়া বড়বাজার এলাকার প্রতাপপুর ঘাট, বাবুগঞ্জঘাট বকুলতলা ঘাটগুলিকে ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। প্রতিটি ঘাটের জন্য প্রয়োজন অনুয়ায়ী নির্মানকাজে ৫০ লক্ষ বা তার বেশি টাকা ব্যয় হচ্ছে।

পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে তুলাপট্টি ঘাট সংস্কারের পাশাপাশি পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার প্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন,“বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী মতিলাল রায় এবং গণিত বিশেষজ্ঞ অক্ষয়চন্দ্র হাঁসের মূর্তি বসানো হবে ওই পার্কে।”

হুগলি ইমামবাড়া লাগোয়া ইমামবাজারের কাছে বাম পুর বোর্ডের আমলে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঘাটটি সংস্কারের। কিন্তু কাজ শুরু করা হয়নি। সেই কাজেও এবার হাত দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সেখানকার কেওটা লাগোয়া চূনীবাবুর ঘাট, কাছারি ঘাট সংস্কারের কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে। এক সময় ওই ঘাট দিয়ে লঞ্চ চলত।

এছাড়াও বড়বাজারের কাছে আরও একটি ঘাট নতুন করে ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। পুরপ্রধান বলেন,“পুরসভার দেড়শো বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। সেই উপলক্ষ্যে পুরোন বেশকিছ ঘাটু সংস্কার এবং নতুন কিছু ঘাটে সংস্কারের কাজ করে আমরা আমরা পুরবাসীকে পুজো উপহার দিতে চাইছি আমরা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement