বন্ধ রয়েছে মিড-ডে মিল

প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ গোঘাটের স্কুলে

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ ছিল। সেই অবস্থাতেই তিনি অবসর নেন। তার পর টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিতে আর কেউ রাজি হচ্ছেন না। স্কুলের এক শিক্ষককে এই দায়িত্ব দিতে চাওয়া হলেও স্কুলের আর্থিক অনিয়ম নিয়ে ওটা অভিযোগে নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনিও ওই পদে যেতে রাজি হচ্ছেন না। এই অবস্থায় প্রশাসনিক জটিলতায় স্কুলে মিড ডি মিল বন্ধ রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫৯
Share:

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ ছিল। সেই অবস্থাতেই তিনি অবসর নেন। তার পর টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিতে আর কেউ রাজি হচ্ছেন না। স্কুলের এক শিক্ষককে এই দায়িত্ব দিতে চাওয়া হলেও স্কুলের আর্থিক অনিয়ম নিয়ে ওটা অভিযোগে নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনিও ওই পদে যেতে রাজি হচ্ছেন না। এই অবস্থায় প্রশাসনিক জটিলতায় স্কুলে মিড ডি মিল বন্ধ রয়েছে। সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা এবং অভিভাবকেরা আরামবাগ মহকুমা অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে গোঘাট ২-এর বিডিওর কাছেও। ঘটনাটি গোঘাটের হাজিপুর ইউনিয়ন হাইস্কুলের।

Advertisement

বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত অবশ্য বলেছেন, “কোনও অবস্থাতেই মিড ডে মিল বন্ধ রাখা যাবে না। টিচার ইনচার্জ ছাড়া স্কুল যখন চলছে তখন যে ভাবে হোক মিড ডে মিল চালাতে হবে।” অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়তী রায় বলেন, “টিচার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে সমস্যা কেটে যাবে দু একদিনের মধ্যেই। মিড ডে মিলও শীঘ্রই চালু করা হবে।”

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ২৮ অগস্ট থেকে হাজিপুর ইউনিয়ন হাইস্কুলের মিড-ডে মিল বন্ধ। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর মল্লিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় মানুষ এবং পরিচালন কমিটির বিক্ষোভে জেরে মিড ডি মিল বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ৩০ অগস্ট প্রধান শিক্ষকের অবসর গ্রহণের দিন রাত পর্যন্ত তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। পরে তদন্ত করার আশ্বাস দিয়ে ব্লক প্রশাসন প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও মুক্ত করে। স্কুল সূত্রে খবর, প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার পরে স্কুলেরই শিক্ষক প্রবীরকুমার সরকারকে টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রবীরবাবু আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত সমস্যা না মেটা পর্যন্ত দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২০০। পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা মিড ডে মিল খায় দৈনিক গড়ে ১৯০ থেকে ২০০ জন। বরাদ্দ আসে ৩৩০ জনের। স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক বিকাশ লাহার অভিযোগ, অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দাবার দেওয়ার জন্য পড়ুয়ারা ওই খাবার খেত না। তা ছাড়া মিড মেল মিল প্রকল্পে প্রচুর টাকা গরমিল হয়েছে। স্কুলভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা গরমিল করেছেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। যদিও সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর মল্লিক সমস্ত অভযোগই অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “সমস্ত ক্ষেত্রেই অডিট রিপোর্ট রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া থেকে নির্দিষ্ট খাতে খরচ করা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই রেজোলিউশন আছে। সেখানে সম্পাদকের সইও আছে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “পরিচালন কমিটির দুর্নীতি বন্ধ করাতেই পরিকল্পিতভাবে আমার চাকরি জীবনে কলঙ্ক লেপন করা হচ্ছে।”

Advertisement

গত সোমবার থেকে সমস্ত অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন মধ্য শিক্ষা পর্ষদের মহকুমায় অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়তী রায়। তিনি বলেন, “সমস্ত বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন