পার্কিং ব্যবস্থা ঢেলে সাজবে হাওড়ায়, ধার্য হবে ফি

আয় বাড়াতে এ বার থেকে কলকাতা পুরসভার মতো পার্কিং ফি নেবে হাওড়া পুরসভাও। এ জন্য হাওড়া পুর-এলাকায় মোট ২০টি পার্কিং জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই ২০টি জোনে পার্কিং-এর জন্য হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট ইতিমধ্যে অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। হাওড়া পুরসভার দাবি, প্রাথমিক ভাবে পার্কিং ফি থেকে বছরে ৮১ কোটি টাকা আয় হবে। পরে পার্কিং ফি থেকে যাতে বছরে ১ কোটি টাকা আয় হয়, সেই চেষ্টা করা হবে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

আয় বাড়াতে এ বার থেকে কলকাতা পুরসভার মতো পার্কিং ফি নেবে হাওড়া পুরসভাও। এ জন্য হাওড়া পুর-এলাকায় মোট ২০টি পার্কিং জোন চিহ্নিত করা হয়েছে।

Advertisement

ওই ২০টি জোনে পার্কিং-এর জন্য হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট ইতিমধ্যে অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। হাওড়া পুরসভার দাবি, প্রাথমিক ভাবে পার্কিং ফি থেকে বছরে ৮১ কোটি টাকা আয় হবে। পরে পার্কিং ফি থেকে যাতে বছরে ১ কোটি টাকা আয় হয়, সেই চেষ্টা করা হবে। এ জন্য আরও পার্কিং জোন বানানো হতে পারে। পুরসভা সূত্রে খবর, টেন্ডার ডেকে এই ফি আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে।

হাওড়া শহরে পার্কিং ব্যবস্থার দাবি দীর্ঘ দিনের। শহরে এত দিন সরকারি ভাবে পার্কিং-এর কোনও ব্যবস্থা না থাকায় চালকেরা যত্রতত্র গাড়ি রাখতেন। যেখানে সেখানে চলছিল বেআইনি পার্কিং। এ ছাড়াও নির্দিষ্ট পার্কিং না থাকায় গাড়ি নিয়ে কাজে বা বাজার করতে এসে নাস্তানাবুদ হতেন গাড়ির মালিকেরা। এই সব অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং পুরসভার আয় বৃদ্ধির জন্য হাওড়া পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরেই পার্কিং জোন তৈরিতে উদ্যোগী হয় নতুন তৃণমূল বোর্ড। এ জন্য এক জন মেয়র পারিষদকে সরকারি ভাবে দায়িত্বও দেওয়া হয়।

Advertisement

হাওড়া পুরসভার পার্কিং-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র বলেন, “হাওড়ায় কোনও পার্কিং ছিল না। তাই পার্কিং করার পরিকল্পনা আগেই ছিল। এ জন্য পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে হাওড়া পুর-এলাকায় ১৪টি জোন বা রাস্তা ও প্রশাসনিক এলাকায় ৬টি জোনের ১০টি রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছ। এতে পুরসভার আয়ও বাড়বে।”

পুরসভা সূত্রে খবর, মোট ২০টি জোনের মধ্যে মালিপাঁচঘরা থানা এলাকায় পার্কিং ব্যবস্থা হয়েছে কেডি জালান রোড ও কালী মজুমদার রোডে। শিবপুরে পার্কিং করা যাবে ডিভক রোডে। গাড়ি রাখা যাবে গোলাবাড়ি এলাকার এইচআর চামারিয়া রোড, বার্ন্ট সল্ট গোলা রোড, সালকিয়া স্কুল রোড, ওয়াটকিনস লেন এবং ডবসন রোড ও ম্যাকেঞ্জি লেনের মোড়ে পেট্রোল পাম্পের কাছে। জিটি রোডে পার্কিং করা হয়েছে বোস রোডে। লিলুয়ার বেনারস রোডের দেবী কাঁটার কাছে এবং বেলগাছিয়া ভাগাড়ের কাছে পার্কিং করা হয়েছে। দাশনগর থানা এলাকায় গাড়ি পার্ক করা যাবে কামারডাঙা রোডে। ব্যাঁটরা এলাকায় পার্কিং-এর ব্যবস্থা হয়েছে বেলিলিয়াস পার্কের কাছে ও ১০০ ফুট রোডে।

এ ছাড়াও প্রশাসনিক এলাকা অর্থাত্‌, জেলাশাসকের বাংলো ও পুর-ভবনের কাছে পার্কিং করা হয়েছে ঋষি বঙ্কিম সেতু, মহাত্মা গাঁন্ধী রোড, নিত্যধন মুখ্যার্জি রোড, চার্চ রোড, শৈলেন মান্না স্টেডিয়ামের নীচে। হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, পার্কের জন্য জায়গা ও রাস্তা চিহ্নিত করে হাওড়া সিটি পুলিশের কাছে পাঠানোর পরে সম্প্রতি অনুমোদন মেলে। সিটি পুলিশ পার্কিং ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দেশিকাও জারি করে। যেমন পার্কিং-এর ক্ষেত্রে পুলিশের সঙ্গে সাহায্য করা, নির্দিষ্ট পোশাক করা ইত্যাদি।

কিন্তু কত করে ধার্য করা হয়েছে এই পার্কিং ফি?

মেয়র পারিষদ শ্যামলবাবু জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রতি ঘণ্টায় দু’টাকার যানের জন্য পার্কিং ফি নেওয়া হবে ৫ টাকা। ছোট গাড়ি, ভ্যানের জন্য ১০ টাকা এবং লরি বা বাসের জন্য ২০ টাকা। এ ছাড়াও সারা দিন পার্কিং-এর জন্য আলাদা ভাবে ফি ধার্য করা হয়েছে।

কিন্তু হাওড়ার রাস্তাঘাট এমনিতেই সঙ্কীর্ণ, এর মধ্যে যে ২০টি জায়গা পার্কিং-এর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে তাতে কি সমস্যা বাড়বে না?

হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি ট্রাফিক সুমিত কুমার বলেন, “পুরসভা যে সব জায়গা বা রাস্তায় পার্কিং করার প্রস্তাব দিয়েছিল, সেখানে গাড়ি রাখার মতো যথেষ্ট জায়গা রয়েছে কি না বা ওই রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হয় কি না তা সমীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সব দেখেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন