সালকিয়ার ঘটনার তিন দিন পরেও অভিযুক্ত পাঁচ যুবকের টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারল না পুলিশ। শনিবারও পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
বুধবার রাতে সরস্বতী ঠাকুর বিসর্জনে যাওয়ার সময় মহিলাদের উত্যক্ত করা নিয়ে কয়েক জন যুবকের সঙ্গে অরূপ ভাণ্ডারী এবং তাঁর বন্ধু অভিজিত্ বসুর গোলমাল হয়। অভিযোগ, রাতে ফেরার সময় ওই যুবকদের হাতে আক্রান্ত হন অরূপ ও অভিজিত্। অভিজিত্কে মেরে রাস্তার পাশের নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। অরূপকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মাথায় মেরে পালায় ওই যুবকেরা। সেই থেকে অরূপ কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
অভিযোগ, ঘটনার পরের দিন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী সুভাষ র্যাফেল অরূপের বাবাকে এলাকার একটি ক্লাবে ডেকে পাঠান। অরূপের বাবা প্রতাপ ভাণ্ডারী জানিয়েছিলেন, সুভাষবাবু তাঁকে টাকা নিয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিতে বলেন।
শনিবার পরিবারের পক্ষ থেকে ফের প্রশ্ন তুললেন অরূপের ভাই অমর। তিনি বলেন, “ছেলেগুলো কোন দলের জানি না। কিন্তু তাঁদের বাঁচাতে কাউন্সিলরের স্বামী কেন বাবাকে ডেকে চিকিত্সার খরচের বিনিময়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিতে বললেন বুঝতে পারছি না। তা হলে দাদাকে আক্রমণকারী যুবকরা কী সুভাষদার আশ্রিত? তাই পুলিশ তাদের ধরছে না?”
সুভাষবাবু অবশ্য এ দিনও বলেন, “সব মিথ্যা কথা। অরূপের বাড়ির কাউকে ক্লাবে ডাকা হয়নি। ওই যুবকদেরও আমি চিনি না।” এ দিন টালির চালের দু’কামরার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অমর বলেন, “আমরা গরিব বলে টাকা দিয়ে সুভাষদা মুখ বন্ধ করতে চাইছেন। কিন্তু উনি দাদাকে সুস্থ করে ফিরিয়ে দিতে পারবেন কী?”
ঘটনার রাতে গুরুতর আহত দাদাকে নিয়ে রাতভর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ঘুরে শেষে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন অমর। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকেই মা গুরুতর অসুস্থ। সকলের একটাই প্রার্থনা, ছেলে ঘরে ফিরে আসুক। কিন্তু ওই বেসরকারি হাসপাতালের খরচ বহন করা তাঁদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অমর রাজ্য সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। অমরের দাবি, “অভিযুক্তরা কোন দলের তা বিচার না করে পুলিশ ওদের গ্রেফতার করুক।”
পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক যুবকেরা ওই এলাকায় ভাড়া থাকত। প্রত্যেকেরই বাড়ি বিহারে। কয়েক জন তিন-চার মাস হল এসেছে।
ফলে তাদের সম্পর্কে স্থানীয়েরা বিশেষ কিছু জানেন না। তাই খুঁজতে সমস্যা হচ্ছে। ডিসি নর্থের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিসি এসবি কৃষ্ণকলি লাহিড়ী বলেন, “খোঁজ চলছে। শীঘ্রই ধরা পড়ে যাবে।”