দুর্নীতির অভিযোগে খানাকুল-২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন দলেরই উপপ্রধান-সহ অধিকাংশ সদস্য। সোমবার এ সংক্রান্ত চিঠি তাঁরা বিডিও-র কাছে জমা দিয়েছেন। ওই পঞ্চায়েতের মোট ১৫টি আসনের সব ক’টিই রয়েছে তৃণমূলের দখলে। তার মধ্যে ১০ জন সদস্য ওই চিঠিতে সই করেছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান দিলীপ সানকি। বিডিও অনুপকুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম মতো ১৫ দিনের মধ্যে তলবি-সভা ডাকতে বলা হবে প্রধানকে। প্রধান না ডাকলে ব্লক প্রশাসন সেই সভা পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে ডাকবে। সেই তলবি-সভায় প্রধানের পক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি সদস্য হাজির না-থাকলে নতুন প্রধান নির্বাচন করা হবে।
তাঁরা দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েতের লক্ষ্যে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন জানিয়ে উপপ্রধান জয়ন্তী মণ্ডলের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতে টেন্ডার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে প্রধানের দুর্নীতি রয়েছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে অবৈধ ভাবে টাকা নয়ছয় হচ্ছে। দলের তহবিলের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে হুমকি দিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে প্রধানের মদতে।” পক্ষান্তরে, প্রধানের দাবি, “দলের একাংশের নানা অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় চক্রান্ত করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। দলের নাম ভাঁড়িয়ে লুটতরাজ চলছে। বিধায়ক-সহ দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক ধরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছিল না। গত বৃহস্পতিবার কাগনান গ্রামের একটি রাস্তায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে খরচ হওয়া টাকার হিসাব চেয়ে তা পেতে দেরি হওয়ায় প্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ অসীম সানকিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। প্রধান পুলিশের দ্বারস্থ হন। সেই আক্রোশেই অনাস্থা আনা হয়েছে বলে দাবি প্রধানের।
দলের এই গোষ্ঠী-কোন্দল এবং অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে খানাকুলের তৃণমূল বিধায়ক ইকবাল আহমেদ জানিয়েছেন, দ্রুত ধান্যগোড়ির সমস্যা মেটানো হবে।