সপ্তাহখানেক আগে কুলটির এক হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষককে মারধরে অভিযুক্তেরা এখনও জেল হাজতে। কিন্তু উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় ধৃত ছ’জনই জামিনে ছাড়া পেয়ে গেলেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে সুবীর দাস, লাল্টু নায়েক, সুশান্ত ধাড়া, পার্বতী নায়েক, কেকা ধাড়া, সুদীপা মান্না নামে ওই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শুক্রবার হাওড়ার উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক জয়শ্রী সাহা তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে সরকারি আইনজীবী প্রদ্যোৎকুমার সামন্তের ব্যাখ্যা, “যে সব ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তার সবগুলিই জামিনযোগ্য। ফলে জামিনের বিরোধিতা করা যায়নি।”
বর্ধমানের কুলটিতে মিঠানি হাইস্কুলেও প্রধান শিক্ষককে মারধর ও জুতোপেটা করার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য মামলা রুজু করে পুুলিশ। সেই কারণেই ধৃতদের জামিনের আবেদন নাকচ হয়েছিল।
কুশবেড়িয়া স্কুলে প্রথম ঝামেলা বাধে বুধবার বিকেলে একটি রান্নাঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে। তারই জেরে প্রধান শিক্ষক উৎপল সরকারকে কয়েক জন মহিলা মারধর করেন। তাঁরা জুতোপেটাও করেন বলেও অভিযোগ।
গ্রামেরই কিছু পুরুষ তাঁদের মদত দিচ্ছিলেন বলে প্রধান শিক্ষক রাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে পরের দিন ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকেরা উলুবেড়িয়া থানায় ঘণ্টা তিনেক বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হল কেন?
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার ব্যাখ্যা, প্রধান শিক্ষক যে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ীই মামলা রুজু করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে যে সব ধারা ব্যবহার যুক্তিযুক্ত, তার সবগুলিই জামিনযোগ্য। উৎপলবাবু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ধৃতেরা আবার তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে করেছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সেই অভিযোগের তদন্ত চলছে। নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে এ দিন স্কুল ছুটি থাকলেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। অন্য শিক্ষকরা সেখানে উপস্থিত হলেও প্রধান শিক্ষক আসেননি।