বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। তারই জেরে বুধবার আরামবাগের নৈসরাই উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সমরেন্দ্র কোনারকে ঘেরাও ও হেনস্থা করা অভিযোগ উঠল স্কুলের কিছু শিক্ষক, ছাত্র এবং তৃণমূলের দখলে থাকা স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক সুকুর আলির বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষককে চাবি দিয়ে রেখে পরে সেই চাবি খুলে সম্পদকের নেতৃত্বে কিছু বহিরাগত যুবক তাঁকে চেলা কাঠ দিয়ে মারধর, লাথি মারে বলে অভিযোগ। এর জেরে অচেতন হয়ে যাওয়ায় সমরেন্দ্রবাবুকে অন্য শিক্ষকেরা আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে জ্ঞান ফিরলে সমরেন্দ্রবাবু জানান, স্কুলের কিছু শিক্ষক, পরিচালন কমিটির সম্পাদকের ইন্ধনেই বহিরাগতরা স্কুলে ঢুকে তাঁকে মারে। সুস্থ হলে তিনি থানায় অভিযোগ জানাবেন।
স্কুল এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকালে স্কুলে প্রার্থনার পর কিছু শিক্ষক ক্লাস বয়কট করার ডাক দিয়ে প্রধান শিক্ষকের ঘরে ঢোকেন। তাঁদেরই একজন শ্যামাপ্রসাদ ঘোষের অভিযোগ, এদিন মূল দাবি ছিল স্কুলে কে কখন ক্লাস নেবেন সেই সংক্রান্ত নির্দিষ্ট রুটিন তৈরির। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রয়োজনে বেতন সংক্রান্ত শংসাপত্র লাগলে প্রধান শিক্ষক তা দিতে চান না। তিনি ফিনান্স কমিটির সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কোনও খরচের হিসাব দেন না।
সুকুর আলির অভিযোগ, ২০১২-’১৩ আর্থিক বছর থেকে অডিট করাচ্ছেন না প্রধান শিক্ষক। বৃত্তিমূলক শাখা সহ নানা খাতের তহবিল তছরুপের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। অন্যদিকে ছাত্রদের দাবি, গণিত, মেকালিক্যাল বিভাগে সহ শিক্ষকের ঘাটতি পূরণ, ওয়ার্কশপের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা প্রভৃতি। তাদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে বৃত্তিমূলক শাখাই তুলে দিতে চাইছেন। সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন দাবি করে সমরেন্দ্রবাবু বলেন, “স্কুলে আইনশৃঙ্খলা ফেরাতে এবং রাজনীতির খবরদারি রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জেরেই ক্রমাগত হামলা হচ্ছে আমার উপর।”
সুকুর আলির আরও দাবি, “যখনই স্কুলের নানা অনিয়ম নিয়ে ফয়সালা করতে চাওয়া হয়, তখনই তিনি হয় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন, নয়তো নিজেকে হার্টের রোগী বলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।” এদিনের ঘটনায় তিনি জানান, প্রধান শিক্ষককে মারার কোনও প্রশ্নই নেই। কিছু অভিভাবকের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়ে থাকতে পারে। বার বার স্কুলে এ ধরনের ঘটনায় মধ্য শিক্ষাপর্ষদের জেলা পরিদর্শক শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”