চলছে ভাঙচুর।—নিজস্ব চিত্র।
ঠিক ছিল মঙ্গলবার গ্রাহকদের বিভিন্ন সরঞ্জাম বিলি করা হবে। সেইমতো এদিন সকাল থেকে শ’তিনেক গ্রাহকও জড়ো হয়েছিলেন সংস্থার দফতরের সামনে। কিন্তু এসে তাঁরা দেখেন দরজা বন্ধ। অনেকক্ষণ পরেও দরজা না কোলায় এবং সংস্থার কাউকে সেখানে না পেয়ে ক্ষিপ্ত গ্রাহকেরা দরজা ভেঙে লুঠপাট চালালেন। ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের অমূল্যকাননে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত একমাস ধরে দক্ষিণ ভারতের একটি বেসরকারি সংস্থা শ্রীরামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। ঘর সাজানোর আসবাবপত্র থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য সামগ্রী সবই বিক্রী করত ওই সংস্থা। বাজার মূল্যের থেকে ৪৫ শতাংশ কম দামে জিনিস বিক্রি করা হত। গ্রাহকেরা জিনিস কিনতে গেলে সংস্থার শর্ত ছিল, পছন্দের জিনিসের দাম আগাম জমা দেওয়ার দশ থেকে পনের দিন পরে গ্রাহককে জিনিস দেওয়া হবে। যদি কোনও কারণে সংস্থা নির্ধারিত জিনিস না দিতে পারে তা হলে জমা টাকার দ্বিগুণ ফেরত দেওয়া হবে। এই প্রলোভনে পা দিয়ে শ্রীরামপুর এলাকার বহু মানুষই ওই সংস্থায় জিনিস কেনার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন। বিশ্বাস অর্জন করতে সংস্থাটি কয়েকটি ক্ষেত্রে জিনিস না দিতে পেরে দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেয়। এতেই আরও ভরসা পেয়ে যান গ্রাহকেরা। কিন্তু এ দিন সকালে সংস্থার লোকজন দফতর তালা বন্ধ করে চম্পট দেয়। জিনিস পাওয়ার আশায় শ’তিনেক গ্রাহক জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু সংস্থার কাউকে না পেয়ে ও দফতর তালা বন্ধ দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকেরা। গেট ভেঙে যে যার পছন্দের জিনিস লুঠপাট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শ্রীরামপুর মাহেশের বাসিন্দা সোমনাথ দে বলেন, “১২হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম একটা স্টিলের খাট কেনার জন্য। মঙ্গলবার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এসে দেখি সংস্থার দরজা বন্ধ। আমার পুরো টাকাই চোট হয়ে গেল” আর এক বাসিন্দা অঞ্জন দাস সাড়ে ৬ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম পাওয়ার জন্য। একই ভাবে প্রতারিত হয়েছেন তিনিও।
জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, এই রকম ঘটনা আগেও কয়েকবার ঘটেছে। আমরা জনসাধারণকে এ জন্য সতর্কও করি। কিন্তু তার পরেও যদিও মানুষ পাঁদের পা দিয়ে প্রতারিত হন, তার জন্য প্রশাসনের কী করার থাকতে পারে। যদিও ওই সংস্থার ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”