পরিবহণের স্বার্থে অটো-টোটোর দ্বন্দ্ব মেটাক প্রশাসন, দাবি যাত্রীদের

হুগলিতে টোটো আর অটোর বিরোধ চলছেই। টোটোর কারণে তাঁদের লোকসান হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক বার অটোচালকদের সঙ্গে টোটো চালকদের বচসা থেকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন বা জেলা পরিবহণ দফতরের তরফে সমস্যার সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দুই তরফেই অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০১:২৩
Share:

হুগলিতে টোটো আর অটোর বিরোধ চলছেই। টোটোর কারণে তাঁদের লোকসান হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক বার অটোচালকদের সঙ্গে টোটো চালকদের বচসা থেকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন বা জেলা পরিবহণ দফতরের তরফে সমস্যার সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দুই তরফেই অভিযোগ। অটোচালক এবং টোটোচালকেদের এই গণ্ডগোলে ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। গণ্ডগোরে জেরে মাঝেমধ্যেই অটো চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হয়রান হচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রশাসন এ ব্যাপারে নিশ্চেষ্ট থাকার কারণেই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। যার ফল ভুগতে হচ্ছে তাঁদের।

Advertisement

অটো এবং টোটোর দ্বন্দ্বের মূল কারণ, যেখানে অটোর জন্য পারমিট নিতে হয়। সেখানে টোটোর জন্য এ ধরনের কোনও ব্যবস্থা নেই। অটোচালকদের দাবি, পারমিট খরচ, রোড ট্যাক্স ইত্যাদি দিয়ে তাঁরা গাড়ি চালান। কিন্তু টোটো চালকদের এ সবের কিছুই দিতে হয় না। অথচ তাঁরা যাত্রী পরিবহণ ব্যবসায় নেমে পড়েছেন। তাঁদের দাবি, অটো ও টোটোর মধ্যে এ ধরনের বৈষম্য প্রশাসনকেই দূর করতে হবে। সেই সঙ্গে আলাদা আলাদা রুটে অটো ও টোটোর চলার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে যে সব টোটো চলছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ এর ফলে তাঁদের ব্যবসার লোকসান হচ্ছে।

যদিও অটোচালকদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে পাল্টা বক্তব্য রেখেছেন টোটো চালকেরাও। তাঁদের দাবি, টোটোর পারমিট নেই, রোড ট্যাক্স দিতে হয় না বলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা এটাও ভাল জানেন যে, জেলায় কত বেআইনি অটো চলে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে জেলা পরিবহণ দফতর থেকে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায় না। নিজেদের পক্ষে টোটো চালকদের দাবি, টোটো পরিবেশ সহায়ক। তাঁদের অভিযোগ, ভারতের অন্যান্য রাজ্যে, পরিবেশ বান্ধব এই গাড়ি চলাচলের জন্য পরিবহণ দফতর যদি ছাড়পত্র দিতে পারে তবে এ রাজ্যে টোটোকে ছাড়পত্র দিতে এত আইনি বাধা কেন। গ্রামাঞ্চলে যাত্রী পরিষেবা দেওয়ার নাম করে পারমিট নিয়ে বেআইনিভাবে হাজার হাজার অটো শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনের সে দিকে নজর নেই। অথচ তাঁদের গাড়ি রাস্তা থেকে ধরে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর আটকে রাখছে। দীর্ঘদিন যদি এ ভাবে চলতে থাকলে তাঁদের না খেয়ে মরতে হবে। টোটো চালক পরিচালন সমিতির সম্পাদক জয়দেব সিংহ বলেন, “চাকরি না পেয়ে বহু বেকার টোটো কিনে স্বনির্ভর হয়েছেন। পরিবেশ বান্ধব এই গাড়ি এখন যদি সরকার না চালাতে দেয় তাহলে কী ভাবে বাঁচবেন তাঁরা?”

Advertisement

হুগলিতে টোটো এবং অটোর মধ্যে লাগাতর গণ্ডগোল প্রসঙ্গে জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের কর্তা (আরটিও) সৈকত দাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হুগলি শহরে টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।”

তবে সংশ্লষ্ট দফতর অনুমতি না দিলেও সাধারণ মানুষ টোটো চলাচলের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। চুঁচুড়ার বাসিন্দা মনোজিৎ দাস বলেন, “সারা বিশ্বে যখন পরিবেশ দূষণ নিয়ে তোলপাড় চলছে, তখন পরিবেশ বান্ধব এই গাড়িকে আইনি জটিলতার অজুহাত দেখিয়ে অনুমোদন না দেওয়াটা ঠিক নয়। শীঘ্রই আইনের জট ছাড়িয়ে এই যানকে যাত্রী পরিষেবার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া উচিত।” শর্মিলি বটব্যাল নামে এক মহিলার কথায়, “পরিবেশ বান্ধব এই গাড়িকে অনুমোদন না দেওয়ার পরিবর্তে তাদের জন্য পরিবহণ দফতর নির্দিষ্ট রুট বেঁধে দিলে অটো ও টোটোর মধ্যে গণ্ডগোল বাধবে না। যাত্রীরাও উপকৃত হবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement