কয়েক দিন আগেই হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ে ট্যাক্সিচালকদের বিনা কারণে হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ তুলে ট্যাক্সি চালানো বন্ধ করে দিয়েছিল শাসক দলের সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন্স অ্যাসোসিয়েশন’। এ বার ফের হাওড়া স্টেশন এলাকাতেই এক ট্যাক্সিচালককে মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। তারও আগে হাওড়া স্টেশন চত্বরে পুলিশি জুলুমের অভিযোগ তুলে দফায় দফায় ধর্মঘট, বিক্ষোভ সমাবেশ, আন্দোলন করেছিল সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি-সহ বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলিও।
অভিযোগ, ট্রাফিক আইন ভাঙায় চালককে কেস না দিয়ে মারধর করেন হাওড়া স্টেশন ট্রাফিক গার্ডের এক কর্মী। অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামী সোমবার হাওড়া জুড়ে ট্যাক্সি ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন বিরোধী ট্যাক্সিচালকদের সংগঠন এআইটিইউসির ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটার্স কোঅর্ডিনেশন কমিটি। যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের দাবি, হাওড়া জুড়ে ট্যাক্সির দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই ট্যক্সিচালকেরা মিথ্যা অভিযোগ তুলে ফের পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা করছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সের কাছে এক যাত্রীকে ট্যাক্সিতে তোলায় ঘুরণ সাউ নামে এক ট্যাক্সিচালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করার অভিযোগ ওঠে বিভাস বিশ্বাস নামে হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের এক এএসআই-এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই দিন সাররাত তাঁকে ট্রাফিক গার্ড অফিসে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে অন্য ট্যাক্সিচালকেরা শুক্রবার সকালে আহত অবস্থায় ওই চালককে সেখান থেকে তুলে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। ট্যাক্সিচালকদের দাবি, ঘুরণকে নির্মম ভাবে মারা হয়েছে। ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশকর্তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে সোমবার হাওড়ায় ট্যক্সি ধর্মঘট ডাকা হবে।
যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, ওই ট্যাক্সিচালককে কিছুই করা হয়নি। পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে তাঁকে রাতে ট্রাফিক গার্ড অফিসে ধরে আনা হয় ঠিকই, কিন্তু তাঁর খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। খাওয়ার পরে তিনি বেঞ্চে শুয়ে ঘুমিয়েও পড়েন। পরে সকালে উঠে তিনি অন্য ট্যাক্সিচালকদের সঙ্গে চলে যান। এ সমস্ত ছবিই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধরা রয়েছে। হাওড়ার ডিসি ট্রাফিক সুমিতকুমার বলেন, “হাওড়ায় ট্যাক্সির দৌরাত্ম নিয়ন্ত্রণ কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করায় এ সব অভিযোগ এখন চালকেরা করছেন। তবে অভিযোগের তদন্ত হবে। তদন্তে মারধরের ঘটনার প্রমাণ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”