ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার যুবকের ঝলসানো দেহ

গৃহকর্তা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় ফ্ল্যাটে থাকতেন মা ও ছেলে। গত মঙ্গলবার থেকে এলাকার লোকজন ওই মহিলাকে বাজার-দোকান করতে দেখলেও ছেলেকে দেখতে পাচ্ছিলেন না। বন্ধুরা ফোন করলেও ওই যুবকের মোবাইল বেজে যাচ্ছিল। বন্ধুরা ভেবেছিলেন, তিনি কাজে ব্যস্ত। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই ফ্ল্যাট থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বেরোনোয় পুলিশে জানান স্থানীয়েরা। পুলিশ এসে ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করে ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের মাথার এক পাশ ছিল থেঁতলানো। শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০১:০১
Share:

সুরজিৎ নন্দী।

গৃহকর্তা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় ফ্ল্যাটে থাকতেন মা ও ছেলে। গত মঙ্গলবার থেকে এলাকার লোকজন ওই মহিলাকে বাজার-দোকান করতে দেখলেও ছেলেকে দেখতে পাচ্ছিলেন না। বন্ধুরা ফোন করলেও ওই যুবকের মোবাইল বেজে যাচ্ছিল। বন্ধুরা ভেবেছিলেন, তিনি কাজে ব্যস্ত। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই ফ্ল্যাট থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বেরোনোয় পুলিশে জানান স্থানীয়েরা। পুলিশ এসে ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করে ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের মাথার এক পাশ ছিল থেঁতলানো। শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গিয়েছিল।

Advertisement

ওই ঘটনাকে ঘিরে এ দিন তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় হাওড়ার ইছাপুরের এইচ আই টি আবাসন এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম সুরজিৎ নন্দী (২৩)। তিনি বাবা সুকুমার নন্দী ও মা মাধুরী নন্দীর সঙ্গে ওই আবাসনের ২১ নম্বর ব্লকের ১ নম্বর ফ্ল্যাটে থাকতেন। মাধুরীদেবী মানসিক ভারসাম্যহীন। দীর্ঘ দিন তাঁর চিকিৎসা চলছিল। পুলিশ জানায়, সুরজিৎ একাদশ শ্রেণির পরে পড়াশোনা ছেড়ে বাবার সঙ্গে ব্যবসার কাজ শুরু করেছিলেন।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি সুকুমারবাবু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন সুরজিৎ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর পরে মাধুরীদেবী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ছেলের সঙ্গে অশান্তি শুরু করেন। সুরজিতের বন্ধু এবং পাশের আবাসনের বাসিন্দা দিব্যেন্দু হালদার নামে এক যুবক বলেন, “বাড়িতে রান্না না হওয়ায় গত সোমবার রাতে আমাদের বাড়িতে খেয়েছিল সুরজিৎ। এর পর ওকে আর দেখিনি। মোবাইল বেজে গিয়েছে।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক দিন মাধুরীদেবীও খুব চুপচাপ ছিলেন। নিজেই দোকান-বাজার করছিলেন দেখে কারও সন্দেহ হয়নি।

Advertisement

সুরজিতেরা যে ফ্ল্যাটে থাকেন, এ দিন সেখান থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয়েরা পুলিশে জানান। পুলিশ এলে দরজা খুলে দেন মাধুরীদেবী। ফ্ল্যাটে ঢুকে পুলিশ সুরজিৎ কোথায় রয়েছে জানতে চাইলে তিনি তাঁর ঘরও দেখিয়ে দেন। পুলিশ ওই ঘরে গিয়ে দেখে, সুরজিতের দেহ চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছে খাটের নীচে। মুখের এক পাশ থেঁতলানো। গোটা শরীর ঝলসানো। কেউ যেন গরম তেল বা জল ঢেলে দিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক যখন ঘুমোচ্ছিলেন, সম্ভবত তখনই ভারী কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে তাঁর গায়ে গরম তেল বা জল জাতীয় ঢেলে দেওয়ায় শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি নিশাত পারভেজ বলেন, “দেহ এতটাই পচে গিয়েছে যে ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে না। ময়না-তদন্তের পরে সব পরিষ্কার হবে। আপাতত আস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রমাণ পেলেই খুনের মামলা রুজু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন