বাইকে তাড়া করে হার-চোর ধরল পুলিশ

হাওড়া গোলাবাড়ির ডবসন রোড দিয়ে রিকশা চেপে যাওয়ার সময়েই জিন্স-গেঞ্জি পরা বছর একুশের ছেলেটিকে নজরে এসেছিল মহিলার। যানজটের সুযোগ নিয়ে কেমন যেন রিকশায় উঠে পড়ার চেষ্টা করছে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০১:৪৯
Share:

হাওড়া গোলাবাড়ির ডবসন রোড দিয়ে রিকশা চেপে যাওয়ার সময়েই জিন্স-গেঞ্জি পরা বছর একুশের ছেলেটিকে নজরে এসেছিল মহিলার। যানজটের সুযোগ নিয়ে কেমন যেন রিকশায় উঠে পড়ার চেষ্টা করছে! ব্যাপারটা ঘটল আরও একটু এগিয়ে।

Advertisement

রিকশাটা ডবসন রোড ও কিংস রোডের মোড়ে পৌঁছতেই রিকশার উপরে এক লাফ দিল ছেলেটা। এক পলকের মধ্যে মহিলার গলার সোনার হার ছিঁড়ে নিয়ে পাঁইপাঁই করে দৌড় লাগাল গোলাবাড়ি সেতুর দিকে। সম্বিত ফিরে পেতেই চিৎকার জুড়লেন মহিলা। কিন্তু কোথায় সে ছেলে! রাস্তার ভিড়ের মধ্যে দিয়ে সাপের মতো এঁকেবেঁকে ছুটছে সে।

কিন্তু কপাল মন্দ ওই ছিনতাইবাজের। রাস্তার লোকজন চিৎকারে কান দিক বা না-দিক, মহিলার চিৎকার শুনেছিলেন গোলাবাড়ি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অনল বন্দ্যোপাধ্যায়। মহিলার ‘চোর, চোর’ চিৎকার শুনেই গোলাবাড়ি সাব-ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল অনলবাবুও ভিড়ের মধ্য দিয়ে এঁকেবেঁকে দৌড় লাগালেন। ‘চোরের’ পিছু পিছু।

Advertisement

ভিড়ের মধ্যে এই চোর-পুলিশ খেলা দেখে বিকেল সাড়ে চারটের সময় হতবাক ওই এলাকার পথচারীরাও। যদিও অনলবাবুর মতো ওই ছিনতাইবাজের পিছনে আর কেউ দৌড়ননি। চোর-পুলিশ খেলায় বছর একুশের ওই ছিনতাইবাজ অবশ্য বেশ কিছুটা এগিয়েও গিয়েছিল। অনলবাবু ভাবছিলেন, আর বোধ হয় চোর ধরা হল না তাঁর।

কিন্তু চোরের বিধি বাম!

আশাহত হয়ে অনলবাবু যখন চোর ধরার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন, হঠাৎই চোখের সামনে দেখতে পেলেন উল্টোদিক থেকে আসা একটা মোটরবাইককে। তড়িঘড়ি সেটাকেই থামালেন তিনি। বললেন, “ভাই, মোটরবাইক ঘুরিয়ে নিন। একটা চোর ধরতে হবে।”

একে পুলিশ, তার উপরে আবার চোর হাত ফস্কে চলে যাবে! ব্যাপারটা ঘোরতর অন্যায় হবে বুঝে মোটরবাইকের মুখ ঘুরিয়ে নেন ওই চালক। তার পর অনলবাবুকে পিছনে চাপিয়ে সোজা চোরের পিছু। চোর তত ক্ষণে অবশ্য গোলাবাড়ি সেতুর দিকে আঁকাবাঁকা রাস্তায় পৌঁছে গিয়েছিল। একটু জিরোতে যাবে কি যাবে না, এমন সময় হঠাৎই তার পথ আটকে দাঁড়ান অনলবাবু ও মোটরবাইক আরোহী। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মোটরবাইক থেকে নেমে প্রায় বাজের ক্ষিপ্রতায় ওই ছিনতাইবাজকে পাকড়াও করেন ওই কনস্টেবল। তার পর সোজা ওই মোটরবাইকে চাপিয়েই গোলাবাড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তত ক্ষণে মহিলাকেও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার বাড়ি উত্তরপাড়ায়। তিনি ওই এলাকার এসি মার্কেটে কেনাকাটা সেরে হাওড়া স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। সে সময় এই ঘটনা। ঘটনার পর মহিলা আতঙ্কিত হয়ে অভিযোগই দায়ের করতে চাইছিলেন না। কিন্তু গোলাবাড়ি থানার পুলিশ তাঁকে আশ্বস্ত করার পর তিনি অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে মহম্মদ মিরাজ নামে ওই ছিনতাইবাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি হাওড়ার পিলখানায়। সোনার হারটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement