সংস্থার দফতরে শ্রমিকদের হাতে ঘেরাও আধিকারিক। ছবি: তাপস ঘোষ
রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী, দফতরের পরিষদীয় সচিব, স্থানীয় বিধায়কের উপস্থিতিতে রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে কারখানার দরজা খুলেছিল। গালভরা আশ্বাস মিলেছিল সরকার এবং মালিকপক্ষের তরফে। কিন্তু আশ্বাসই সার। বকেয়া মেলেনি এখনও। দু’মাসের বেতন হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কারখানার অফিসারদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও রাখলেন হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার ক্ষিপ্ত শ্রমিকরা।
সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। মালিকপক্ষের ডানলপ ইউনিটের জেনারেল ম্যানেজার দেবপ্রসাদ সিংহ, প্রোডাকশন ম্যানেজার পঙ্কজ মাঝি, জেনারেল ম্যানেজার (মেনটেন্যান্স) অপূর্ব ঘোষ ঘেরাও হয়ে পড়েন শ্রমিকদের হাতে। ঘণ্টা পাঁচেক ঘেরাও চলে। শ্রমিকদের অভিযোগ, বার বার মালিকপক্ষকে জানালেও বকেয়া মেটানো হচ্ছে না। সাতশোর কিছু বেশি শ্রমিককে কেবল ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। মৃত ৪০ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ৮ জনের পরিবার সাহায্য পেয়েছে। মাস কয়েক আগে কারখানা খুলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু উৎপাদন কবে থেকে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শ্রমিকরা। রক্ষণাবেক্ষণের কাজের তৎপরতা নিয়েও অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।
ওই বিভাগের কর্মী মনোরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “সেপ্টেম্বর মাসে শেষ বেতন পেয়েছি। কর্তৃপক্ষকে বললেই বলা হচ্ছে, ওঁরা নাকি সংশ্লিষ্ট জায়গায় ফোন করেছেন। টাকা পেতে সমস্যা হবে না। কিন্তু আশ্বাসই সার। এই বাজারে মাত্র ৫ হাজার টাকা বেতনও যদি ঠিক সময়ে না দেওয়া হয়, তা হলে আমাদের চলবে কী করে।” ওই বিভাগেরই অন্য এক শ্রমিক সুফল ভৌমিকের অভিযোগ, “রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য কিছু জিনিস দরকার। তালিকা দিয়েছি আমরা। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। তা হলে কাজটা হবে কি করে? মন্ত্রী বা মালিকপক্ষ এত আশ্বাস দিলেন। অথচ বাস্তব পুরো উল্টো।” ঘেরাওকারীদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।
সিটু নেতা বিতান চৌধুরী বলেন, “কারখানার দরজা খুলেছে ঠিকই। কিন্তু উৎপাদনের লক্ষ্যে কিছুই তো হচ্ছে না। দাবি আদায়ে পথে নামা ছাড়া উপায় নেই।” কারখানার অফিসাররা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত বলেন, “শ্রমিকরা যে বেতন পাননি, তা আজই জানলাম। এ ব্যাপারে শ্রমমন্ত্রীকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।”