বেতন বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘট, অচলাবস্থা চটকলে

বেতন পরিকাঠামো সংশোধন-সহ বিভিন্ন দাবিতে বুধবার রাজ্য জুড়ে চটকলে ধর্মঘট করল ২০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অবশ্য ধর্মঘটের বিরোধিতা করে। যদিও, সেই বিরোধীতার প্রভাব ধর্মঘটে খুব একটা পড়েনি। বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি খোলা থাকলেও সার্বিক ভাবে রাজ্যের ৫৯টি চটকলেই ধর্মঘটের প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২২
Share:

শ্যামনগর জুটমিলের বাইরে বিক্ষোভ শ্রমিকদের। ছবি: তাপস ঘোষ।

বেতন পরিকাঠামো সংশোধন-সহ বিভিন্ন দাবিতে বুধবার রাজ্য জুড়ে চটকলে ধর্মঘট করল ২০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অবশ্য ধর্মঘটের বিরোধিতা করে। যদিও, সেই বিরোধীতার প্রভাব ধর্মঘটে খুব একটা পড়েনি। বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি খোলা থাকলেও সার্বিক ভাবে রাজ্যের ৫৯টি চটকলেই ধর্মঘটের প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে। গোলমালের আশঙ্কায় বিভিন্ন চটকলের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

Advertisement

গত ৬ মাস বা তারও বেশি কিছু সময় ধরে রাজ্যের চটকলগুলিতে কার্যত বন্ধ্যা পরিস্থিতি চলছে। পাটজাত দ্রব্যের পর্যাপ্ত বরাত না থাকায় উত্‌পাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে কিছু চটকলে কর্তৃপক্ষ সপ্তাহে কাজ ৪ দিনে নামিয়ে এনেছেন। তাতেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। কাজের যোগান দিতে শ্রমিকদের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলি করা হচ্ছে। এ সব নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। হুগলিতে কর্তৃপক্ষের বদলি নীতির ফলে সম্প্রতি শ্রমিক-বিক্ষোভে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের লোকজনের গায়ে হাত পড়েছে। পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

বুবধার দুর্গাপুরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে আইএনটিটিইউসি নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চটকল ধর্মঘটে কিছু প্রভাব পড়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু এখন চটশিল্পের এমন অবস্থা যে মালিকরাই ধর্মঘট চাইছেন। এখন শ্রমিক ধর্মঘট করে কী হবে?” হুগলির আইএনটিটিইউসি নেতা বিদ্যুত্‌ রাউত বলেন, “প্রশাসনিক ভাবে ধর্মঘটীদের বারে বারেই ধর্মঘট থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ওরা তা শুনলেন কই! একেই শ্রমিকরা কাজ পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় আরও একদিন তাঁদের কর্মহীন করে দেওয়া অনুচিত।” বিদ্যুত্‌বাবু যোগ করেন, “প্লাস্টিক লবির দাপট মোকাবিলা করতে পারছে না কেন্দ্রীয় শ্রম দফতর। তাই, চটশিল্পের এই হাল। মন্দা কাটাতে একজোট হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় এটা।”

Advertisement

হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় গঙ্গার দুই পাড়ে চটশিল্পের এখন বেহাল পরিস্থিতি। শ্রমিকেরা কাজ পাচ্ছেন না। বিকল্প রুজির ব্যবস্থা নেই। তার ফলে চটকলগুলির শ্রমিক মহল্লায় এখন শুধুই হতাশা। প্রবীন এক সিপিএম নেতা বলেন, “রাজ্য সরকারও চটশিল্পের অচলাবস্থার জন্য দায় এড়াতে পারে না। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী তো কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রা কাড়ছেন না। রাজ্য সরকার সঠিক নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ।” এসইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি নেতা সন্তোষ ভট্টাচার্য বলেন, “চটকল শ্রমিকদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন