বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রতারণা চক্রের হদিস মিলেছে চুঁচুড়ায়, গ্রেফতার

বর্ধমান-কাণ্ডের সঙ্গে সংযোগ খুঁজতে গিয়ে চুঁচুড়ায় একটি ভাড়াবাড়িতে রেলে চাকরির নামে প্রতারণা চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। ন’মাস আগে পিরতলার কিশোরীবাগান এলাকায় একটি দোতলা বাড়ি ভাড়া নেয় একটি পরিবার। তাদের আচার-আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় এবং বর্ধমান-কাণ্ড সামনে আসায় পড়শিরা শনিবার পুলিশে খবর দেন। ওই রাতেই পুলিশ বাড়িটিতে হানা দেয়। কিন্তু পরিবারের কাউকে ধরতে পারেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২০
Share:

চুঁচুড়ায় এই বাড়িতেই হানা দেয় পুলিশ। রবিবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।

বর্ধমান-কাণ্ডের সঙ্গে সংযোগ খুঁজতে গিয়ে চুঁচুড়ায় একটি ভাড়াবাড়িতে রেলে চাকরির নামে প্রতারণা চক্রের হদিশ পেল পুলিশ।

Advertisement

ন’মাস আগে পিরতলার কিশোরীবাগান এলাকায় একটি দোতলা বাড়ি ভাড়া নেয় একটি পরিবার। তাদের আচার-আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় এবং বর্ধমান-কাণ্ড সামনে আসায় পড়শিরা শনিবার পুলিশে খবর দেন। ওই রাতেই পুলিশ বাড়িটিতে হানা দেয়। কিন্তু পরিবারের কাউকে ধরতে পারেনি। আগেই ঘরে তালা ঝুলিয়ে তারা পালায়। তালা ভেঙে পুলিশ ঘর থেকে দু‘টি স্ক্যানার, একটি প্রিন্টার, কিছু ভুয়ো ভোটার কার্ড, রেলের ভুয়ো স্ট্যাম্প-সহ কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করে। রবিবার তল্লাশি চালিয়ে ওই প্রতারণা চক্রে যুক্ত অভিযোগে মল্লিক কাশেম হাটের বাসিন্দা হোসেন আলি নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃত জেরায় অপরাধের কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি। তবে, রাত পর্যন্ত ভাড়াটিয়া শেখ কাজির নাগাল পুলিশ পায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, ‘‘ওখান থেকে যে সব জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা থেকে পরিষ্কার ওখানে রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্র কাজ করছিল। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিশোরীবাগান এলাকার ওই বাড়িটির মালিক চুঁচুড়ার ফুলপুকুরের বাসিন্দা মৃগাঙ্ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়িটি ভাড়া দেওয়ার জন্য স্থানীয় এক যুবকের মাধ্যমে তাঁর আলাপ হয়েছিল হোসেন আলির সঙ্গে। সেই হোসেনের মাধ্যমেই গত ফেব্রুয়ারিতে মাসিক কয়েক হাজার টাকায় ১১ মাসের চুক্তিতে বাড়িটি ভাড়া নেয় বর্ধমানের পানাগড়ের রনডিহার বাসিন্দা শেখ কাজি। তার সঙ্গে থাকত ছেলে, ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রী। কিন্তু ওই পরিবারের লোকজনের গতিবিধি ও আচরণ দেখে সন্দেহ প্রকাশ করতেন স্থানীয়েরা।

Advertisement

পড়শিদের একাংশের অভিযোগ, ওই বাড়ির লোকেরা পাড়ার কারও সঙ্গে মিশত না। রাতে অনেক লোকজন আসত। খাওয়াদাওয়া, হইহুল্লোড় করে সকলে রাতেই চলে যেত। এ সব দেখে পড়শিরা পরিবারকে এড়িয়ে চলতেন।

কিন্তু বর্ধমান-কাণ্ড সামনে আসার পরে ওই পরিবারের প্রতি পড়শিদের সন্দেহ বাড়ে। তাঁরা শনিবার ঘটনার কথা চুঁচুড়া থানায় জানান। ওই রাতেই পুলিশ হানা দেয়। জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার পরে বাড়িটিতে তালা লাগিয়ে দেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মৃগাঙ্কবাবু এবং যে যুবকের মাধ্যমে হোসেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। মৃগাঙ্গ বলেন, “হোসেনের পরিচিত বলে আমি শেখ কাজিকে বাড়ি ভাড়া দিই। শেখ কাজি বলেছিল, ও প্রোমোটারি করে। আমি ভাড়া নিতে যেতাম। এখন পুলিশ যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’ কত বেকারকে চক্রটি প্রতারণা করেছে, এখন সেই জল্পনাই করছেন পড়শিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন