ভোটার তালিকায় জীবিতকে ‘মৃত’, সংশোধনের আশ্বাস

কেউ হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছেন। কেউ অসুস্থ। কেউ বা দিনভর ব্যস্ত চাষাবাদের কাজে। অথচ, হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার শ’খানেক বৃদ্ধবৃদ্ধাকে ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে ভোটার-তালিকায়। গত ৫ জানুয়ারি নতুন ওই তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখানেই ওই তথ্য দেখে গ্রামবাসীরা অবাক। ভোট দিতে না পারা তো রয়েছেই, সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫২
Share:

কেউ হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছেন।

Advertisement

কেউ অসুস্থ।

কেউ বা দিনভর ব্যস্ত চাষাবাদের কাজে।

Advertisement

অথচ, হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার শ’খানেক বৃদ্ধবৃদ্ধাকে ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে ভোটার-তালিকায়। গত ৫ জানুয়ারি নতুন ওই তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখানেই ওই তথ্য দেখে গ্রামবাসীরা অবাক। ভোট দিতে না পারা তো রয়েছেই, সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

ভোটার-তালিকায় ওই ত্রুটির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিডিও প্রসেনজিত্‌ ঘোষ। তিনি বলেন, “এ ধরনের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে, আশঙ্কার কিছু নেই। আমরা তালিকা থেকে বাদ যাওয়া ব্যক্তিদের নাম দ্রুত ভোটার তালিকাভুক্ত করার ব্যবস্থা করব।” হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সঞ্জয় বসুও বলেন, “এমন সমস্যা হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সেপ্টেম্বর নাগাদ সাঁকরাইল ব্লকে ভোটার-তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। সেখানে যেমন নতুন নাম সংযোজিত হয়, তেমনই কিছু নাম বাদও যায়। বুথ লেভেল অফিসাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করেন। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই ভোটার-তালিকা তৈরি হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের তরফে শুনানিরও ব্যবস্থা হয়। সেখানে কোনও ব্যক্তির জীবিত থাকা নিয়ে যথাযথ প্রমাণ না মিললে তাঁর নাম ভোটার-তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি নতুুন ভোটার-তালিকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাতে আসায় জীবিত গ্রামবাসীদের ‘মৃত’ বলে দেখানোর বিষয়টি সামনে আসে। এ নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চাঞ্চল্যও ছড়ায়। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সীদেরই ভোটার-তালিকায় ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে।

যেমন, রঘুদেববাটি পঞ্চায়েতের ২৭৯ নম্বর বুথের বাসিন্দা গোপাল মণ্ডল ভোটার-তালিকায় ‘মৃত’। তাঁর আশঙ্কা, “আমার সচিত্র পরিচয়পত্র রয়েছে। কিন্তু ভোটার-তালিকায় নাম না থাকলে তো ভোটই দিতে পারব না।” ওই বুথেরই বাসিন্দা কৃষ্ণলাল সরকারও ভোটার-তালিকায় ‘মৃত’। একই অবস্থা ২৮৩ নম্বর বুথের কদবানু বেগম সর্দার, মেহেরুন বিবি শেখের মতো অনেকেরই। কদবানু বলেন, “এমনটা কী ভাবে হল বুঝতে পারছি না। আমি বার্ধক্য-ভাতা পাই। এর পরে সেই ভাতা পাব তো?”

প্রশাসনের আধিকারিকেরা অবশ্য জানিয়েছে, বার্ধক্য-ভাতা, ইন্দিরা আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের যাঁরা ইতিমধ্যেই উপভোক্তা, ওই ভোটার-তালিকায় তাঁদের ‘মৃত’ দেখানো হলেও প্রাপ্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হবেন না। তবে, ভোটার-তালিকায় নাম না থাকলে নতুন উপভোক্তাদের সমস্যা হবে। সেই কারণে, ভোটার-তালিকায় যে সব গ্রামবাসীর তথ্যে ত্রুটি রয়ে গিয়েছে, তা দ্রুত সংশোধনের চেষ্টা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ওই আধিকারিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন