ভিড়ে মহিলাদের নিরাপত্তায় বাড়তি সতর্কতা দুই জেলায়

কোথাও ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকছে মহিলা-পুলিশ। কোথাও আবার মণ্ডপ থেকে নজরদারি চালাচ্ছে সিসিটিভি-র ক্যামেরা। থাকছে রাস্তার মোড়ে অস্থায়ী সহায়তা কেন্দ্র। ষষ্ঠী থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে জনজোয়ার। পুজোর দিনগুলিতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে কোমর বেঁধে নেমেছে দুই জেলার পুলিশ। তারা বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৬
Share:

কোথাও ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকছে মহিলা-পুলিশ।

Advertisement

কোথাও আবার মণ্ডপ থেকে নজরদারি চালাচ্ছে সিসিটিভি-র ক্যামেরা।

থাকছে রাস্তার মোড়ে অস্থায়ী সহায়তা কেন্দ্র।

Advertisement

ষষ্ঠী থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে জনজোয়ার। পুজোর দিনগুলিতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে কোমর বেঁধে নেমেছে দুই জেলার পুলিশ। তারা বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য।

হুগলিতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে দু’জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৮ জন ডিএসপি, ২০ জন ইনস্পেক্টর, ৭০ জন এসআই এবং এএসআই থাকছেন। এ ছাড়ও থাকবেন ৩০০ জন কনস্টেবল, ২০০ জন হোমগার্ড এবং সিভিক ভলান্টিয়ার্স। অন্য জেলা থেকেও পুলিশ আনা হয়েছে।

জেলা পুলিশের শীর্ষ অফিসারেরা জানিয়েছেন, পুজোয় কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানাস্তরে বারে বারে বৈঠক করা হয়েছে। মহিলা অফিসারের নেতৃত্বে মহিলা-পুলিশ বাহিনী বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে এবং দর্শনার্থীদের ভিড়ে মিশে থাকবেন। ইভটিজিং বা অন্য কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই তাঁরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। প্রত্যেক মণ্ডপে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে পুরুষ ও মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার্সরা কড়া নজরদারি চালাবেন। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মোটরবাইকে চেপে পুলিশবাহিনী চক্কর দেবে। জেলার বেশ কিছু বড় পুজোর উদ্যোক্তারা মণ্ডপে এবং আশপাশে সিসিটিভি লাগিয়েছেন পুলিশের পরামর্শে। কোনরকম অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটলে সেই ফুটেজ সংগ্রহ করে দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শহরে প্রবেশপথ এবং গঙ্গার ঘাটগুলিতেও নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। দিনরাত পুলিশের কন্ট্রোল-রুম খোলা থাকবে। বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বা পুজো মণ্ডপের কাছে ‘পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র’ও থাকছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, “সব রকমের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুলিশ প্রস্তুত। পুজো দেখতে বেরিয়ে মানুষ যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বক্ষণ রাস্তায় থাকবে।”

উত্তরপাড়া, কোন্নগর, শ্রীরামপুর, ডানকুনি, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, আরামবাগের মতো শহরাঞ্চলে অসংখ্য থিমের পুজো দেখতে ঢল নামে। পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপগুলিতে ভিড়। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য হুগলি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন থানা এলাকায় ইতিমধ্যেই ‘গাইড ম্যাপ’ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে পুজো কমিটি এবং দর্শনার্থীদের আচরণবিধি নিয়ে নানা পরামর্শ এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপ এবং আশপাশে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক রাখতে বলা হয়েছে। শেওড়াফুলি-বৈদ্যবাটিতে স্থানীয় পুরসভার তরফেও ভিড় ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বেচ্ছ্বাসেবক নামানো হচ্ছে। আরামবাগ শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হয়েছে। বেআইনি মদ এবং জুয়ার বিরুদ্ধে চলছে পুলিশি অভিযান।

ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য পুজোর দিনগুলিতে জেলার দিল্লি রোড এবং দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে কলকাতামুখী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। দুর্গাপুজো থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত এই দুই সড়কে দুপুর আড়াইটে থেকে রাত দু’টো পর্যন্ত কলকাতার দিকে পণ্যবাহী গাড়ি যেতে পারবে না। দুই রাস্তাতেই ট্রাফিক পুলিশ নজর রাখবে। জিটি রোডেও বেলা ২টো থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।

ষষ্ঠী থেকেই ভিড় উপচে পড়ছে হাওড়ার বাগনান, উলুবেড়িয়া আমতা, বাউড়িয়ার মতো বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপে। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, মহিলা ও কচিকাঁচাদের নিরাপত্তার বিষয়টিকেই মূলত তাঁরা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছেন। এ জন্য প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে থাকছে পুলিশ প্রহরা। মণ্ডপের সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার্সও।

বাগনান, উলুবেড়িয়া, পাঁচলা, সাঁকরাইল, ডোমজুড় এলাকায় পুজো দেখতে হলে মুম্বই রোড পেরোতে হয়। বাগনান শহরে পুজোর দিনগুলিতে বিকেলের পর বাস ঢুকতে দেওয়া হয় না। ফলে, মুম্বই রোডই হয়ে দাঁড়ায় অস্থায়ী বাসরুট। কিন্তু এ জন্য যানজট এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশের কর্তারা জানান।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, শহরের আটটি গুরুত্বপুর্ণ জায়গায় থাকবে ‘বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র’। গঙ্গা পেরিয়ে বজবজ থেকে বহু দর্শনার্থী বাউড়িয়ায় আসেন। এ জন্য জেটিঘাটে থাকছে বাড়তি পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর স্পিড বোট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন