চলছে সংস্কারের কাজ।—নিজস্ব চিত্র
আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে হাওড়ার আমতার মান্দারিয়া সেতু সংস্কারের কাজ। গত ছয় মাস আগে এই সংস্কার কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেচ দফতরের আমতা সাব ডিভিশন কার্যালয় সূত্রের খবর, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন সেতুর উপর দিয়ে পুরোমাত্রায় যান চলাচল শুরু হয়ে যাবে। সেতুটি সংস্কার হওয়ায় হাঁপ ছেড়েছেন বাসিন্দারা।
এই এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মান্দারিয়া খাল মিশেছে দামোদর নদে। খালটি ১৯৭৪ সালে সংস্কার করা হয়। সংস্কারের আগে খালের উপরে ছিল কাঠের সেতু। কিন্তু খাল সংস্কারের সময়ে কাঠের সেতু বদলে দিয়ে কংক্রিটের করে সেচ দফতর। সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ ফুট।
প্রায় ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতু আমতার সঙ্গে উদয়নারায়ণপুরের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল। আমতা ২ ব্লকের হানিধাড়া, থলিয়া, বিনোলা কৃষ্ণবাটি, গ্রাম পঞ্চায়েত, উদয়নারায়ণপুরের হরিশপুর, আমতা ১ ব্লকের রসপুর, বালিচক প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে শহরে যাতায়াত হয় এই সেতুর উপর দিয়েই। নিয়মিত ট্রেকার এবং অটো রিকশা, লরিও চলাচল করে।
বছর পাঁচেক আগে সেতুর এক দিক বসে যায়। ফলে মাঝখানে কংক্রিটের আচ্ছাদন ফাঁক হয়ে যায়। এই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই সেতু যান চলাচল করতে থাকে। দিনের পর দিন ফাঁক বেড়ে যাওয়ায় সেতুটিকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করে এর উপর দিয়ে ভারি যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সেচ দফতর।
সেতুটির এই হাল হওয়ায় বিপাকে পড়েন বাসিন্দারা। সব্জি বোঝাই লরি আর সেতুর উপর দিয়ে আসতে পারছিল না। ব্যবসায়ীদের অনেকটা ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে সব্জি পরিবহন করে আনতে হচ্ছিল। সোমেশ্বর, কলিকাতা, রসপুর, শাচক, কুমারিয়া প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা পাকা বাড়ি তৈরি করার সময় ইমারতি দ্রব্য সরাসরি ট্রাকে করে নিয়ে যেতে পারছিলেন না। সেতুর আগে ট্রাক থেকে সেগুলি নামিয়ে ভ্যান রিকশায় চাপিয়ে ইমারতি দ্রব্যগুলি বাড়ি তৈরির জন্য তাঁদের নিয়ে যেতে হচ্ছিল। শুধুমাত্র ট্রেকার ও অটো রিকশাগুলি চলাচল করতে পারলেও সেতুর যা অবস্থা তাতে যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। তারপরেই বছর দুই আগে সেতুটি সংস্কারের পরিকল্পনা করে সেচ দফতর। এর জন্য টাকাও বরাদ্দ করা হয়। তৈরি হয় নকশা এবং মাটি পরীক্ষার কাজ। সেচ দফতরের এক কর্তা জানান, সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে সেতুটির সংস্কার করা হচ্ছে। আগের থেকে অনেক মজবুত এবং ভারবহনের ক্ষমতা থাকছে এই সেতুর। ক্ষতিগ্রস্ত স্ল্যাব পাল্টে ফেলা হয়েছে। স্ল্যাবগুলি পাল্টানোর সময়ে কিছুদিন যান চলাচল বন্ধ থাকলেও বর্তমানে ফের তা চালু হয়ে গিয়েছে। ওই কর্তার দাবি, “আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু চালু হয়ে গেলে ফের তা ফের স্বমহিমায় ফিরে আসবে।”