এক মহিলার বাপেরবাড়িতে ঢুকে অ্যাসিড ছুড়ে তাঁর মুখ ঝলসে দিয়ে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন এক যুবক। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রিষড়ার পাঁচলকি এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো সম্পর্কের জেরেই ওই ঘটনা। আহত মহিলা এবং পিন্টু মান নামে ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মহিলার দু’টি চোখই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিত্সকেরা।
এসডিপিও (শ্রীরামপুর) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, “পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ওই যুবক কোথা থেকে অ্যাসিড পেল, তা-ও দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বত্রিশের ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙায়। স্বামী কাঠের কাজ করেন। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বছর দু’য়েক আগে ছেলেকে নিয়ে পাঁচলকির বাপেরবাড়িতে চলে আসেন মহিলা। পিন্টু ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ির পাশেই থাকেন। মাঝেমধ্যেই তিনি রিষড়ায় মহিলার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মহিলার বাপেরবাড়িতে যান পিন্টু। দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। এর পরেই ওই যুবক সঙ্গে আনা স্টিলের পাত্র থেকে মহিলাকে লক্ষ করে অ্যাসিড ছোড়েন বলে অভিযোগ। স্টিলের পাত্রটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অ্যাসিডে মহিলার কপাল থেকে বুক পর্যন্ত ঝলসে যায়। তখন নিজের মুখে বিষ ঢেলে দেন পিন্টু। দু’জনেই মাটিতে কাতরাতে থাকেন। পড়শিরা তাঁদের শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত এক চিকিত্সক বলেন, “মহিলার দু’টি চোখই মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুবকটির অবস্থাও আশঙ্কাজনক।” পরে মহিলাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সরানো হয়। যুবকটি পুলিশি প্রহরায় ওই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। তাঁকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তকারী অফিসারদের কাছে পিন্টু দাবি করেছেন তাঁর সঙ্গে ওই মহিলার ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল। সম্প্রতি দু’জনের মধ্যে ‘সমস্যা’ হয়েছিল।
তবে মেয়ের সঙ্গে পিন্টুর সম্পর্কের কথা মানতে চাননি আক্রান্ত মহিলার মা। তাঁর দাবি, “পিন্টু মেয়েকে মামি বলে ডাকত। দু’-এক দিন বাড়িতেও এসেছে। শুক্রবারও এসেছিল। আমি ওকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করি। কিন্তু শনিবার সকালে আমি যখন বিদ্যুতের বিল জমা দিতে যাই, তখনই ও ঢুকে ওই কাণ্ড ঘটায়। কিন্তু কেন পিন্টু এমন করল বলতে পারব না।”