ঘড়িবাড়ির মাঠ প্রোমোটারেরা ঘেরা শুরু করতে মঙ্গলবার টনক নড়ল প্রশাসনের।
এদিকে উত্তরপাড়া রাজবাড়ি ঘড়িবাড়ির মাঠ প্রোমোটারদের হাতে তুলে দেওয়ার নেপথ্যে দলীয় কে বা কারা যুক্ত তার তদন্ত শুরু করল। এর পাশাপাশি ওই জমিতে যেহেতু তিনটি জলাভূমি সরকারি খাতায় রয়েছে, সে বিষয়ে মৎস্য দফতরকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন জেলাশাসক মনমীত নন্দা। প্রশাসনিক স্তরে ওই জমিতে যে সব গাছ রয়েছে তা বন দফতরের কোনও অনুমতি ছাড়াই কেন কাটা হল তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বস্তুত, জমিদারি আমলের ঘড়িবাড়ির মাঠ নিয়ে উত্তরপাড়া অঞ্চলের মানুষের আবেগ জড়িত রয়েছে। বাম আমলে ঘড়িবাড়ি ভাঙার নেপথ্যে তৎকালীন সিপিএম কাউন্সিলরদের নাম জড়িয়ে গিয়েছিল। শাসক বদলালেও রীতিনীতির বদল হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এই আমলের শাসক তৃণমূলের বেশ কয়েকজন পুরসভার কাউন্সিলরের নাম ওই জমি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। আর তার ফলেই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন দলীয় নেতৃত্ব।
হুগলির জেলা তৃণমূলের সভাপতি ,রাজ্যের শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত মঙ্গলবার বলেন, “আমি ওই মাঠ এবং সংলগ্ন পুকুর রক্ষায় জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। সরকারি স্তরে চেষ্টা চলছে মাঠটি রক্ষায়। এ নিয়ে মৎস্য এবং বন দফতরেও কথা বলেছি।”
একই সঙ্গে তপনবাবুর সংযোজন, “দলের লিখিত নির্দেশ আছে দলীয় এবং সরকারি পদে থেকে কোনওরকম প্রোমোটারি বা ঠিকাদারি কার্যকলাপে যুক্ত হওয়া যাবে না। আমরা জেনেছি উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার বিভিন্ন এলাকার অন্তত চারজন কাউন্সিলর সরাসরি ওই অনৈতিকভাবে জমির হাত বদলে জড়িত। বিষয়টি দলের পক্ষে অস্বস্তিকর। দলের ভাবমূর্তি সরাসরি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনও কাজ দলে থেকে করা যাবে না।”
দলীয় স্তরে পদক্ষেপ শুরু হলেও প্রবীণ এক বাসিন্দার বক্তব্য, “আমরা কিন্তু বসে নেই। কেন না, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। সরকার বা শাসকদল ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আগে মাঠ ও পুকুর রক্ষা করুন। তা হলে আমরা দু’হাত তুলে ওঁদের সাধুবাদ জানাব।” এদিকে এদিনই হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দার কাছে স্থানীয় মানুষজনের তরফে আবেদন নিয়ে এক প্রতিনিধি দল যান। তাঁরা জেলাশাসককে অনুরোধ করেন পদক্ষেপ করতে।
এ দিন অবশ্য আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে যথারীতি পুলিশ ক্যাম্প করে ঘড়িবাড়ি মাঠ ঘেরার কাজ চলেছে।