কেটে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুত্‌ সংযোগ

রেল অবরোধে হিন্দমোটরের শ্রমিকেরা

কয়েক কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকায় উত্তরপাড়ার বন্ধ হিন্দুস্তান মোটরস কারখানা এবং সেখানকার শ্রমিক আবাসনের বিদ্যুতের লাইন কাটা গিয়েছে। ফলে, জল এবং বিদ্যুত্‌ পরিষেবা পাচ্ছেন না শ্রমিক আবাসনের বাসিন্দারা। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে প্রায় এক ঘণ্টা হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার হিন্দমোটর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এর জেরে ট্রেনযাত্রীরা চরম নাকাল হন। শেষ পর্যন্ত রেল পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিলে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিন্দমোটর শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:০০
Share:

কর্মী আবাসনের বাসিন্দাদের রেল অবরোধ।--নিজস্ব চিত্র।

কয়েক কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকায় উত্তরপাড়ার বন্ধ হিন্দুস্তান মোটরস কারখানা এবং সেখানকার শ্রমিক আবাসনের বিদ্যুতের লাইন কাটা গিয়েছে। ফলে, জল এবং বিদ্যুত্‌ পরিষেবা পাচ্ছেন না শ্রমিক আবাসনের বাসিন্দারা। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে প্রায় এক ঘণ্টা হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার হিন্দমোটর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এর জেরে ট্রেনযাত্রীরা চরম নাকাল হন। শেষ পর্যন্ত রেল পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিলে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

Advertisement

শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “প্রশাসনকে বলেছি আবাসনের বাসিন্দাদের জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে। বিদ্যুতের লাইন কাটার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে কথা বলব।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রমিকদের স্বেচ্ছাবসরের জন্য সম্প্রতি কারখানায় বিজ্ঞপ্তি দেন কর্তৃপক্ষ। তা নিয়ে শ্রমিকদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। তার আগেই অবশ্য কারখানা এবং শ্রমিক আবাসনের অন্তত দশ কোটি টাকা বিদ্যুত্‌ বিল বাকি পড়ে। রাজ্য বিদ্যুত্‌ বণ্টন সংস্থা টাকা চেয়ে বারে বারেই হিন্দমোটর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত বকেয়া না মেটানোয় গত বুধবার বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়। তার জেরেই শ্রমিক আবাসনের অন্তত এক হাজার বাসিন্দা বিপাকে পড়েন।

Advertisement

উত্তরপাড়া পুরসভা জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে পানীয় জলের সমস্যা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে ঠিকই কিন্তু তাতেও জল সঙ্কট পুরোপুরি মিটছে না বলে অভিযোগ শ্রমিক আবাসনের বাসিন্দাদের। তাঁদের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে সমস্যার সুরাহার জন্য দরবারও করা হয়। কিন্তু কোনও তরফেই কোনও সুরাহা মেলেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। শ্রমিক আবাসনে প্রচুর ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। অনেকেরই সামনে পরীক্ষা। বিদ্যুতের অভাবে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।

এই সব সমস্যা সামাধানের দাবিতেই এ দিন বিকেলে শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন কারখানার প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। বিকেল পাঁচটা নাগাদ হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার আপ এবং ডাউন লাইনে অবরোধ করেন। অবরোধের জেরে লোকাল ট্রেনগুলি বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে রেল এবং জেলা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মেন শাখার দূরপাল্লার ট্রেনগুলিকে কর্ড লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।

কারখানার আইএনটিইউসি নেতা কামাখ্যা সিংহ বলেন, “শ্রমিকদের প্রচুর টাকা বকেয়া রয়েছে। তার উপর বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হল। সরকার কোনও ব্যবস্থা করছে না। এই পরিস্থিতি চললে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” এ দিন অবরোধে সামিল স্নাতক স্তরের পড়ুয়া প্রিয়াঙ্কা প্রিয়া বলেন, “সামনেই পরীক্ষা। বাড়িতে তিন দিন ধরে আলো নেই, জল নেই। এই পরিস্থিতিতে আমরা বাঁচব কী করে? কর্তৃপক্ষ একবার ভাবছেন না আমাদের অবস্থা?” একই সুরে দ্বিতীয় বর্ষের আর এক ছাত্রীর ক্ষোভ, “এই পরিস্থিতি চললে আমরা পড়াশোনা করব কী ভাবে?” কারখানার শ্রমিক প্রভাকর রাও বলেন, “শ্রমিক আবাসনের বেশির ভাগ কর্মীই স্বেচ্ছাবসরের আবেদনপত্র তোলেননি। সে জন্যই আমাদের উপর এই অত্যাচার চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন