হয়নি সেতু, বেহাল দুই সাঁকো দিয়েই ঝুঁকির যাত্রা

আজও হল না পাকা সেতু। ফলে, কাঠের ভাঙাচোরা, নড়বড়ে দু’টি সাঁকোই একমাত্র সম্বল শ্যামপুরের চারটি পঞ্চায়েতের হাজার পঞ্চাশেক মানুষের। স্কুল-কলেজ যাওয়া থেকে শুরু করে অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াসব ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়েন তাঁরা। তা সত্ত্বেও সেতু তৈরিতে প্রশাসন উদাসীন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২৯
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

আজও হল না পাকা সেতু। ফলে, কাঠের ভাঙাচোরা, নড়বড়ে দু’টি সাঁকোই একমাত্র সম্বল শ্যামপুরের চারটি পঞ্চায়েতের হাজার পঞ্চাশেক মানুষের। স্কুল-কলেজ যাওয়া থেকে শুরু করে অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াসব ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়েন তাঁরা। তা সত্ত্বেও সেতু তৈরিতে প্রশাসন উদাসীন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।

Advertisement

শ্যামপুর-১ ব্লকের বালিচাতুড়ি পঞ্চায়েতের ভবানীপুর এলাকায় একই রাস্তার দু’প্রান্তে সাঁকো দু’টি রয়েছে। একটি রয়েছে পুরনো দামোদর নদীর উপরে। অন্যটি রয়েছে ওই নদী সংলগ্ন খালের উপরে। আগে খেয়া পেরিয়েই গ্রামবাসীরা যাতায়াত করতেন। বছর ১৫ আগে সেখানে প্রায় ২০০ ফুটের দু’টি সাঁকো তৈরি হয়। কিন্তু যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে সাঁকো দু’টির ভগ্নদশা। বহু জায়গায় জোড়াতালি দিয়ে রাখা হয়েছে। জোয়ারের জল বাড়লে তো বটেই, এমনিই সাঁকো দু’টি নড়বড় করে। ফলে, মালপত্র নিয়ে ভারী কোনও যান চলাচল করতে পারে না। হেঁটে বা সাইকেল, মোটরবাইকেও যেতে গ্রামবাসীরা ভয় পান। অথচ, উপায় না থাকায় বালিচাতুরি, নবগ্রাম, ধান্দালি, বেলাড়ি এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ শ্যামপুর আসতে এই পথ ধরেই। না হলে তাঁদের ঘুরতে হয় ২০ কিলোমিটারেরও বেশি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্লক অফিস, থানা, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিস, স্কুল-কলেজ, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সবই রয়েছে নদীর ও পাড়ে। ফলে, ওই সব জায়গায় যেতে গেলে ওই বিপজ্জনক সাঁকো পেরিয়েই যেতে হয়।

Advertisement

সাঁকো দু’টির এক প্রান্তের রাস্তা গিয়েছে গড়চুমুক ৫৮ গেট পর্যন্ত। অন্য প্রান্তের রাস্তাটি গিয়েছে শ্যামপুর থানার কাছে। দু’টি রাস্তাতেই যানবাহন চলে। কিন্তু ওই যানবাহন সেতুর উপর দিতে যেতে না পারায় সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয় যাতায়াতের ক্ষেত্রে। এলাকার লোকেরা অটো করে এসে সেতুর মুখে নামেন। ফের সাঁকো পেরিয়ে অটো ধরে শ্যামপুরে আসেন। কোনও রোগীকে কমলপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হলে তাঁকে সেতুর মুখে নামিয়ে খালি অ্যাম্বুল্যান্স সাঁকো পেরিয়ে কোনও রকমে আসে। রোগীকেও কাঁধে করে নিয়ে এসে ফের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হয়। এ ছাড়া, সাঁকোর নীচের দিকে কোনও নৌকা নিয়ে যেতে গেলে সাঁকোর কিছু অংশ খুলে দিতে হয়। সেই সময়ে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা যাতায়াত বন্ধ থাকে। ফলে, খুবই সমস্যায় পড়েন লোকেরা।

সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন শ্যামপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রঞ্জিত বেরা। তিনি বলেন, “সেচ দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন সাঁকো দু’টি পাকা করার। তা হলে ওই এলাকার মানুষের অনেক উপকার হয়।”

সেচ দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে একটি সাঁকো পাকা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মাটি পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। আর দ্বিতীয় সাঁকোটি এখন ভাল করে সংস্কার করা হবে। পরে সেটি পাকা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন