HOwrah Station

সাড়ে ৭ মাসের ‘ঘুম’ ভাঙা আড়ষ্টতা কাটতেই ভিড়-ব্যস্ততার চেনা ছবি হাওড়া স্টেশনে

ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছুঁইছুই। প্ল্যাটফর্মে ঢুকল কাটোয়া লোকাল। কয়েকশো নয়, মনে হল জনস্রোত আছড়ে পড়ল স্টেশন চত্বরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২০ ১৪:০০
Share:

ট্রেন চালু হতেই আগের চেনা ছবি ফিরে এল হাওড়া স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: বেলা বাড়তেই উধাও স্বাস্থ্যবিধি, উপচানো ভিড়ে ফিরল লোকাল ট্রেনের চেনা ছবিই

Advertisement

কোভিড মোকাবিলার জন্য রেল-রাজ্যের যৌথ ব্যাবস্থাপনায় নেওয়া হয়েছে একাধিক সুরক্ষা বিধি। মেট্রোর ধাঁচেই বসার আসনে ক্রস চিহ্ন দিয়ে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্টেশনে ঢোকার মুখেই রাজ্য সরকারের অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মীরা প্রতি যাত্রীর দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন। প্রতি স্টেশনে রাখা হয়েছে ‘আইসোলেশন’ জোন। কোনও যাত্রীর তাপমাত্রা বেশি পাওয়া গেলে তাঁকে সেই জোনে রেখে স্বাস্থ্য দফতরকে খবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। থার্মাল গান নিয়ে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে করতেই অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মী শ্রদ্ধা পাত্র বলেন,‘‘ ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি কারও দেহের তাপমাত্রা পাওয়া গেলেই তাঁকে আটকানো হচ্ছে।” যদিও সকাল থেকে একজনকেও সে রকম পাননি শ্রদ্ধা। প্ল্যাটফর্মে ঢোকার পরেই বসার জায়গাতে যাতে সবাই ভিড় করতে না পারেন বা প্ল্যাটফর্মের কোনও অংশে যাতে ভিড় না হয় তার জন্য নজর রাখছেন রেলরক্ষী বাহিনীর কর্মীরা। মাইকে চলছে কোভিড সচেতনতার প্রচার। প্রথম দিনের ব্যবস্থাপনা প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে দেখছেন রেলের শীর্ষ কর্তারা।

তার মধ্যেই প্ল্যাটফর্মে ঢুকল কাটোয়া লোকাল। ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছুঁইছুই। কয়েকশো নয়, মনে হল জনস্রোত আছড়ে পড়ল স্টেশন চত্বরে। যাত্রীদের তাড়াহুড়ো, রেল রক্ষীদের দৌঁড়ঝাপ — এক লহমায় ফিরিয়ে দিল চেনা হাওড়া স্টেশনের ছবি। এক প্রৌঢ়া যাত্রী ভিড় থেকে একটু তফাতে গিয়ে অভিযোগ করছিলেন,‘‘কোথায় সামাজিক দুরত্ব। গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে আসতে হল।” প্রৌঢ়ার কথা শুনে পাশ দিয়ে যেতে যেতে একজন বলেন,‘‘ আজ প্রথম দিন। কাল থেকে দেখবেন দাঁড়ানোর জায়গাও পাবেন না।” জানা গেল, তাঁর নাম প্রদীপ ঘোষ। জিরাট থেকে আসছেন। যাবেন শোভাবাজার। প্রদীপের কথায়, ‘‘এই ক’দিন যাতায়াতে সময় লাগছিল ৫ ঘণ্টা। আজ ট্রেনে ফের ১ ঘণ্টায় পৌঁছতে পারলাম।” ভিড় আর কোভিড বিধি নিয়ে প্রশ্ন করতেই তাঁর উত্তর,‘‘ রেল-সরকার যা করার যথেষ্ট করেছে। এ বার বাকিটা আমাদের উপর। আমরা সতর্ক হলেই বাঁচব।”

পর পর পৌঁছচ্ছে ব্যান্ডেল লোকাল, বর্ধমান লোকাল। অফিস টাইমের হাওড়া স্টেশন ফের স্বমহিমায়। সব এক। ফারাক শুধু একটাই। যাত্রীদের ফাঁক গলে যাতায়াত করছেন না সেফটিপিন থেকে শসার ফেরিওয়ালারা। অপেক্ষায় তাঁরা, কবে ফের পা রাখতে পারবেন নিজেদের খুব পরিচিত কামরায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন