সরকারি আবাসনে কাটা পড়ল শতাধিক গাছ

ইছাপুরের নর্থ ল্যান্ড এলাকায় ওই কারখানার কর্মীদের আবাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩৬
Share:

ভূপতিত: আবাসন চত্বরে কাটা পড়েছে এই গাছগুলিই। মঙ্গলবার, ইছাপুরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

দীর্ঘদিনের পুরনো সরকারি আবাসন। গঙ্গার ধারের ওই আবাসনে উপরি পাওনা ছিল গাছগাছালি ভরা পরিবেশ। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘ইছাপুর মেটাল অ্যান্ড স্টিল ফ্যাক্টরি’র সেই আবাসন এলাকাতেই প্রচুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। কারখানা কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, তাঁরা আইন মেনেই গাছ কেটেছেন। বন দফতর অবশ্য জানিয়েছে, মোট ৪৫টি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার বাইরেও গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে।

Advertisement

ইছাপুরের নর্থ ল্যান্ড এলাকায় ওই কারখানার কর্মীদের আবাসন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু হয় গাছ কাটা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইতিমধ্যে ৫০টিরও বেশি বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তার সঙ্গে কাটা হয়েছে প্রচুর ছোট গাছও। সব মিলিয়ে কেটে ফেলা গাছের সংখ্যা প্রায় দেড়শো।

ব্যারাকপুর আদালতের আইনজীবী অনন্যা মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি রোজ ওই আবাসনের ভিতরের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। অনন্যা বলেন, ‘‘বড় গাছের সঙ্গে প্রচুর ছোট গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। যেটা আগে বাগান ছিল, সেটা এখন কার্যত ফাঁকা মাঠ।’’

Advertisement

পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে কাজ করেন এলাকার বাসিন্দা তারক পাল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি জানতে গিয়েছিলাম। যাঁরা গাছ কাটছিলেন, তাঁরা বলেন মোট পাঁচ হাজার গাছ কাটা হবে। আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে তাঁরা জানান, অনুমতি নিয়েই কাজ হচ্ছে। প্রতিবাদ, অভিযোগ করে কোনও লাভ হবে না।’’ এর পরেই রবিবার থেকে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে বিষয়টি নিয়ে জনমত সংগ্রহ শুরু হয়। তখনও কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, অনুমতি নিয়েই কাজ করা হচ্ছে।

সোমবার আবাসনে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর গাছের গুঁড়ি পড়ে রয়েছে। ভ্যানে করে সেগুলি বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয়েরা প্রশ্ন তুলেছেন, যে কাজের জন্যই হোক, এত গাছ কাটার অনুমতি বন দফতর দিল কী করে? এতে আখেরে তো পরিবেশেরই ক্ষতি হচ্ছে।

বন দফতরের বারাসত ডিভিশনের বনাধিকারিক অংশুমান মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য গাছ কাটার অনুমতি চেয়েছিলেন। একটি গাছের পরিবর্তে পাঁচটি গাছ লাগানোর শর্তে তাঁদের ৪৫টি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’’ অংশুমানবাবু জানান, তাঁদের কাছে অভিযোগ এসেছে, তার থেকে বেশি গাছ কাটা হয়েছে। তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে কারখানার অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার টিকা রাম বলেন, ‘‘ওখানে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। আমরা আইন মেনেই কাজ করেছি। তদন্ত তো হচ্ছে। তাতেই সব প্রমাণ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন