পার্থের বৈঠকেও উঠল না অনশন

সন্ধ্যায় অনশনরত প্রার্থীদের তরফে তানিয়া শেঠ জানান, তাঁদের পাঁচ প্রতিনিধি এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩৮
Share:

প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান হবু শিক্ষকদের। নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হল। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র না-মেলায় অনশন-বিক্ষোভ তুললেন না স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষকপদ প্রার্থীরা। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে মেয়ো রোডে মঙ্গলবারেও তাঁদের অনশন-অবস্থান চলে।

Advertisement

সন্ধ্যায় অনশনরত প্রার্থীদের তরফে তানিয়া শেঠ জানান, তাঁদের পাঁচ প্রতিনিধি এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। শিক্ষামন্ত্রী কোনও লিখিত প্রতিশ্রুতি দেননি, তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। মেয়ো রোডে অনশনকারীদের কাছে গিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য জানান। তানিয়া বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা সব শুনে জানান, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গো আলোচনায় তাঁরা কোনও রকম আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি না-পেলে তাঁরা অনশন তুলবেন না।’’

শিক্ষকপদ প্রার্থীরা যে এখনও অনশন-অবস্থানে অটল আছেন, তা জানানো হলে শিক্ষামন্ত্রী সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘ওরা রোজ বসে থাকুক!’’

Advertisement

এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ অনশনকারীদের প্রতিনিধিদল বিকাশ ভবনে পার্থবাবুর অফিসে যায়। ঘণ্টাখানেক আলোচনা চলে। সেখানে ছিলেন এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকারও। বৈঠক শেষে এসএসসি-র শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি জানান, ওই প্রার্থীদের সুপারিশপত্র ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। নিয়োগপত্র দেওয়ার কাজও শুরু হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে। তার পরে আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ায় তাঁদের নিয়োগ বন্ধ আছে। এ ক্ষেত্রে এসএসসি-র কিছু করার নেই। সৌমিত্রবাবু বলেন, ‘‘নবম-দশম

ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৃতীয় দফার কাউন্সেলিং দ্রুত শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার আগেই কাউন্সেলিংয়ের বিজ্ঞপ্তি জারি করা যাবে।’’

এ দিনই স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সল্টলেকের ময়ূখ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র (এমএসকে) ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে)-এর কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের বিক্ষোভে যোগ দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী। পরে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘দলমত নির্বিশেষে আপনাদের পাশে থাকার বার্তা দিতে এসেছি।’’ একই সূরে সোমেনবাবু বলেন, ‘‘সরকার নানা খাতে এত খরচ করছে। অথচ এমএসকে ও এসএসকে শিক্ষকদের বেতন বাড়াতে পারল না! এই সরকার অমানবিক।’’

বিকেলে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল এসএসকে-এমএসকে টিচার্স অ্যান্ড এএস ঐক্য মঞ্চের কয়েক জন সদস্য। বৈঠকের পরে তাঁদের তরফে মুকুলেশ রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আশ্বাস পেয়েছি। তাই বিক্ষোভ তুলে নিচ্ছি।’’ যদিও এমএসকে এবং এসএসকে-র অন্য একটি দল এখনও ময়ূখ ভবনের সামনে বিক্ষোভ বন্ধ করেনি।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁদের যোগ্যতা আছে, তাঁরা নিশ্চয়ই ইন্টারভিউয়ে ডাক পাবেন। ইন্টারভিউয়ে পাশ করলে পাবেন চাকরিও।’’ পার্থবাবু আরও জানান, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৃতীয় দফায় কাউন্সেলিংয়ের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। এমএসকে এবং এসএসকে শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধির দাবি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁরা কি শিক্ষকের স্বীকৃতি পেয়েছেন? যা-ই হোক, এ দিনের বিক্ষোভকারীদের সব দাবির কথাই মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন