বধূমৃত্যুতে বেকসুর খালাস স্বামী-শাশুড়ি

এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর স্বামী ও শাশুড়িকে সাত বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছিল নদিয়া জেলা আদালত। শুক্রবার তাঁদের বেকসুর মুক্তি দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

শমীক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৭
Share:

এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর স্বামী ও শাশুড়িকে সাত বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছিল নদিয়া জেলা আদালত। শুক্রবার তাঁদের বেকসুর মুক্তি দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

পুলিশের দাবি ছিল, মৃত্যুর আগে হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে জবানবন্দি দিয়ে ওই বধূ আর্জিনা বিবি জানান, শাশুড়ি ও স্বামী কী ভাবে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়েছে। মূলত ওই জবানবন্দির উপর ভিত্তি করেই জেলা আদালতে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে আলিমা ও জাহাঙ্গিরকে সাত বছর কারাবাসের নির্দেশ দেন বিচারক। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল মামলা দায়ের করেন তাঁরা।

শুক্রবার ওই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টের বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র আদালতে। অভিযুক্তদের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল আদালতে জানান, পুলিশের সাক্ষীই আদালতে জানিয়েছেন, আর্জিনাকে ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়। অর্থাৎ, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আর্জিনার নিকট-আত্মীয় অন্য দুই সাক্ষী বলেন, ওই মহিলার ‘মাইগ্রেন’ (তীব্র মাথার যন্ত্রণা) ছিল। প্রায়ই তিনি ওই রোগে ভুগতেন। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। কল্লোলবাবু আরও জানান, মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নিতে হলে কাউকে সাক্ষী রাখতে হয়। হাসপাতালের অন্য কোনও চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য দফতরের কোনও কর্মী বা তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের সামনে সেই জবানবন্দি নেওয়া হয়নি।

Advertisement

অন্য দিকে পুলিশের বক্তব্য ছিল, ২০১৪ সালের ৮ জুন ধুবুলিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হন আর্জিনা বিবি (২৭)। ওই দিনই তাঁকে শক্তিনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ জুন তিনি মারা যান। আর্জিনার বাবা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান, পণের জন্য শ্বশুরবাড়িতে তাঁর মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার হতো। তাঁর দাবি ছিল, ঘটনার দিন শাশুড়ি আলিয়া বেগম প্রথমে আর্জিনার গায়ে কেরোসিন তেল ঢালেন। তার পরে স্বামী জাহাঙ্গির গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। সরকারি আইনজীবী অয়ন বসু হাইকোর্টেও বলেন, বিয়ের সাত বছরের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়ে আর্জিনা মারা গিয়েছেন। তাঁর বাবা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, পণের জন্য মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার হতো। জেলা আদালত সঠিক কারণেই তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করে কারাবাসের নির্দেশ দেন।

দু’পক্ষের যুক্তি শুনে অভিযুক্তদের বেকসুর মুক্তিই দেন হাইকোর্টের বিচারপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন