Mamata Banerjee

দলটা তিনিই দেখে নেবেন! ফের বার্তা দিলেন মমতা, বিধায়কদের বৈঠকে নেত্রীর নীতি তিরস্কার-পুরস্কারের

সোমবারের পরিষদীয় দলের বৈঠকে বেশ কয়েক জন বিধায়ককে সরাসরি মমতার রোষানলে পড়তে হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বরাবনির বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৮
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।

গত তিন মাসে একাধিক বার বলেছেন, দলে এবং সরকারে তিনিই শেষকথা! সোমবার বিধানসভায় তৃণমূলের পরিষদীয় দলের বৈঠকে সেই কথা আরও এক বার স্পষ্ট করে দিলেন সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী তিনি দলের অন্দরে তিরস্কার এবং পুরস্কারের রেওয়াজও চালু করেছেন। পরিষদীয় দলের বৈঠকে কেউ কেউ যেমন হুঁশিয়ারির সঙ্গে তিরস্কৃত হয়েছেন, তেমনই কেউ কেউ পুরস্কৃতও হয়েছেন স্বয়ং দলনেত্রী তাঁর কাজের প্রশংসা করায়।

Advertisement

পাশাপাশিই, পরিষদীয় দলকে মমতা বলেছেন বুথ এবং ব্লক স্তরে কারা দলের দায়িত্বে থাকবেন, সে ব্যাপারে বিধায়কেরা যেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে তাঁদের ‘পরামর্শ’ পাঠান। আলাদা ফাইল করে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অরূপের কাছে সেই নামগুলি জমা দিতে বলেছেন মমতা। জানিয়েছেন, তার পরে তিনি সবটা দেখে নেবেন। প্রতিটি স্তরের জন্য তিনটি করে নাম চেয়েছেন মমতা। যার ফলে ফের এক বার তৃণমূলে সাংগঠনিক রদবদলের জল্পনা উস্কে উঠেছে।

সূত্রের খবর, পরিষদীয় দলের বৈঠকে মমতা বলেছেন, দল তিনিই দেখে নেবেন। সেই ‘দেখে নেওয়া’র ফলিত রূপ হিসেবে নির্দেশ দিয়েছেন, দলে সকলকে নিয়েই চলতে হবে। দলীয় বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলা যাবে না। বিধায়কদের উদ্দেশে মমতা বলেছেন, এক বার ভুল করলে ক্ষমা করা যায়। কিন্তু বার বার ভুল করলে ক্ষমা করা যায় না। সম্প্রতি তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং নারায়ণ গোস্বামী দলকে বিড়ম্বনায় ফেলে নিজেরা বিপাকে পড়েছিলেন। দু’জনকেই শো কজ় করেছিল দল। তাঁদের লিখিত ভাবে সেই শো কজ়ের জবাবও দিতে হয়েছে। আবার জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্ত স্থানীয় স্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। বিবেককে চিত্তরঞ্জন কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মমতা বিশেষত কারও নাম না করলেও বৈঠকে উপস্থিত বিধায়কদের ধারণা, তিনি হুমায়ুন, নারায়ণ, বিবেকদের উদ্দেশেই ওই কথা বলেছেন।

Advertisement

সম্প্রতি দলের পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাকের বিরুদ্ধে ‘তোলাবাজি’ করার অভিযোগ এনে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তা নিয়ে জলঘোলা শুরু হতেই দ্রুত রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে চিঠি লিখে ক্ষমা চান মদন। তার নেপথ্যে যে মমতার ‘নির্দেশ’ ছিল, তা স্পষ্ট হয়েছিল। সূত্রের খবর, পরিষদীয় দলের বৈঠকে মদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, মদন ভুল করেছিলেন। কিন্তু তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।

বেশ কয়েক জন বিধায়ককে অবশ্য সরাসরি মমতার রোষানলে পড়তে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বরাবনির বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। বিধানকে মমতা বলেছেন, তাঁর নামে যা যা অভিযোগ উঠছে, তাতে কান পাতা দায় হয়ে পড়ছে! পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘সমস্যা’ মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বিধানকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। দিনহাটার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহকে সংবাদমাধ্যমের সামনে বেশি কথা বলতে বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সর্বোচ্চ নেত্রী। মানিকচকের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে বলেছেন, জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীর সঙ্গে ‘সমস্যা’ মিটিয়ে নিতে।

প্রশংসিতও হয়েছেন কেউ কেউ। ইটাহারের বিধায়ক মোশারফের উদাহরণ দিয়ে বৈঠকে মমতা বলেছেন, তিনি যেমন বুথে বুথে ঘুরে কাজ করেন, সে ভাবে সকলকেই কাজ করতে হবে। মোশারফ দলের সংখ্যালঘু সেলের দায়িত্বেও রয়েছেন। সম্প্রতি আমলা পিবি সেলিমকে সরিয়ে মোশারফকেই সংখ্যালঘু বিত্তনিগমের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement