মুর্শিদাবাদে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
তাঁকে ‘চমকে’ লাভ নেই। কারণ ‘চমকালে’ তিনি পাল্টা ‘গর্জান’। এই ভাষাতেই জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাথার দাম’ ধার্য করেছেন সদ্য। গোটা দেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে তা নিয়ে। তৃণমূল তো বটেই, কংগ্রেস, সপা, বসপা, এমনকী বামেরাও নিন্দা করেছে বিজেপির যুব নেতার এই মন্তব্যের। সংসদও উত্তাল হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মুখ খুললেন একটু দেরিতে। হুমকির প্রসঙ্গ সরাসরি উচ্চারণ করলেন না ঠিকই। তবে মুর্শিদাবাদের সভা থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, কোনও হুমকির সামনে তিনি মাথা নত করেন না।
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা করেছেন। সেই সভা থেকে সাগরদিঘিতে ৫০০ মেগাওয়াটের ৪ নম্বর ইউনিটের উদ্বোধন হয়েছে এ দিন। তিনি বলেন, ‘‘অমি এর আগে বিধানসভা ভোটের সময়ও ডোমকলে এসেছি। তখন আমরা সৌমিককে (সৌমিক হোসেন) জেতাতে পারিনি। কিন্তু তার পরেও আমরা এখানে এসেছি অনেক প্রকল্প নিয়ে। কারণ আমরা উন্নয়ন নিয়ে কোনও রাজনীতি করি না।’’ মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের দুই প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস এবং বাম। স্বাভাবিক ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কংগ্রেস এবং বামেদের কড়া সমালোচনাই শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বামেদের দেখেছি, কংগ্রেসকে দেখেছি, বিজেপিকেও দেখেছি, কেউ এই জেলায় কিছু করেনি। আমরা ছিলাম বলেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ব বিদ্যালয়ের জমি সঙ্কট মিটেছে।’’
আরও পড়ুন: মমতাকে খোঁচা বিজেপির
তিনি বলেন, ‘‘এই জেলায় কংগ্রেস-সিপিএম ভোট নেয়, কিন্তু কোনও কাজ করে না। এমনকী গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন নিয়েও তারা চুপ থাকে।’’ অধীর চৌধুরী-সহ মুর্শিদিবাদের অন্য সাংসদদের আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘‘এমপি-দের আপনারা বলুন, তাঁরা কী করছেন? কারও কারও আবার আমাকে গালাগাল না করলে পেটের ভাত হজম হয় না। অনেক স্থানীয় নেতা আছেন কেউ সজনে ডাঁটা, পুঁই ডাঁটার মত লক লক করেন। তাঁরা অনেক কিছু বলেন। কথায় আছে ছাগলে কী না খায়, আর পাগলে কী না বলে। তাই আমি এঁদের দোষ দিই না।’’
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা করেছেন। ছবি: পিটিআই।
বাম-কংগ্রেসের পরেই বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংখ্যালঘু প্রধান মুর্শিদাবাদের সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং মেরুকরণের চেষ্টার অভিযোগ তোলেন তিনি। বিজেপির সমালোচনা করার সময়ই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁকে চমকে-ধমকে লাভ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমাকে চমকে-ধমকে লাভ নেই। কারণ আমাকে চমকালে আমি গর্জাব।’’ বিজেপি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে বলে অভিযোগ করে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা এ রাজ্যে দাঙ্গা বাধাতে চাইছেন, তাঁদের বলি, আপনারা দাঙ্গা তৈরী করবেন, আর আমরা রুখব। আমি মানুষের পাহারাদার।’’