কোনও কলেজকে চিহ্নিত করে সেখানেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির চিন্তাভাবনা চলছে। প্রতীকী ছবি
বাংলা থেকে যথেষ্ট সংখ্যায় আইএএস অফিসার না-মেলায় প্রশাসনিক স্তরে স্থায়ী দুর্ভাবনা আছে। আইএএস-সহ বিভিন্ন ধরনের আমলা তৈরির জন্য তাই এ বার জেলায় জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনিক সূত্রের খবর। সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই এই প্রকল্পের উদ্বোধন হতে পারে।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের ইউপিএসসি পরীক্ষার তালিম দিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির জন্য উপযুক্ত জায়গা দেখতে ইতিমধ্যেই জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। গোটা প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উচ্চশিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে। তাঁকে সাহায্য করবেন অন্য এক জন আইএএস অফিসার। প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, আপাতত কোনও কলেজকে চিহ্নিত করে সেখানেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির চিন্তাভাবনা চলছে। তবে কী পদ্ধতিতে গোটা বিষয়টি পরিচালিত হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট জেলায় কর্মরত আইএএস অফিসারেরাও সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়ানোর দায়িত্ব পাবেন।
কেন্দ্রীয় ভাবে ইতিমধ্যেই অবশ্য সত্যেন্দ্রনাথ টেগোর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার কাজ করছে। সেখানে ১০০ আসনের আবাসিক পরিকাঠামো আছে। ওই কেন্দ্রে পড়ানোর জন্য রয়েছে শিক্ষকদের প্যানেলও। দিল্লির একটি আইএএস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে ওই সেন্টার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, জেলা স্তরে তৈরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে সাহায্য করবে সত্যেন্দ্রনাথ টেগোর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “গোটা প্রক্রিয়ায় সত্যেন্দ্রনাথ টেগোর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টারের সক্রিয় সহযোগিতা থাকায় জেলা-ভিত্তিক পড়ুয়াদের কাছেও বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হবে। এমন পরিকাঠামো থাকলে রাজ্যের সম্ভাবনাময় ছাত্রছাত্রীদের চিহ্নিত করে তাদের ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য তৈরি করতে পারবে প্রশাসন।”
রাজ্যে প্রয়োজনের তুলনায় আইএএস অফিসার যে কম, সেই সমস্যার কথা বারে বারেই তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, আইএএস সংখ্যা কম থাকায় জেলার সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রূপায়ণেও সমস্যা হচ্ছে। এক-একটি ব্যাচে আইএএস অফিসারের সংখ্যা
আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়। তাই কেন্দ্রের কাছে আইএএস ক্যাডার রিভিউয়ের দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব। অনেক প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকের
বক্তব্য, রাজ্যে বাঙালি আইএএস অফিসারের সংখ্যাও বেশ কম। অফিসারদের যে-ব্যাচ আসছে রাজ্যে, তাতে বাঙালি অফিসার খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। সেই কারণে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (এটিআই) নতুন অফিসারদের রাজ্যের সার্বিক পরিচিতি দেওয়ার প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে। সেই দিক থেকে জেলায় জেলায় এমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পদক্ষেপ সফল হলে তাতে আখেরে লাভ হবে রাজ্যেরই।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ