বাংলাদেশের দুই পর্যটককে থানায় নিয়ে গিয়ে হেনস্থায় অভিযুক্ত শিলিগুড়ি পুলিশের এএসআই শ্যামল দত্ত রায়কে সরিয়ে দেওয়া হল পুলিশ লাইনে। শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসি ও এসিপিদের নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। থানাতে নিয়ে গিয়ে ওই দুই বিদেশির কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘বিদেশি পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর ব্যাপার। আপাতত অভিযুক্ত অফিসারকে ক্লোজ করে মাল্লাগুড়ির পুলিশ লাইনে রাখা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলেই পদক্ষেপ করা হবে।’’ সেই সঙ্গে আগামী দিনে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য সব থানাকে সতর্ক করে দিয়েছেন পুলিশ।
গত ২৮ মে শিলিগুড়ির খালপাড়া এলাকায় ওই দুই পর্যটককে হয়রানির ঘটনাটি ঘটে। ওই দুই পর্যটকের একজন ব্যবসায়ী ও অন্য জন ইঞ্জিনিয়ার। তাঁরা গত ২৬ মে দার্জিলিঙে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ২৮ মে সকালে তাঁরা শিলিগুড়িতে পৌঁছন। প্রধাননগর এলাকায় একটি হোটেলে মালপত্র রেখে রিকশায় উঠে ভাল খাবারের হোটেলে নিয়ে যেতে বলেন চালককে। ওই রিকশা চালকই তাদের খালপাড়া রেলগেট লাগোয়া বিবেকানন্দ রোডের নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেন। হঠাৎ পুলিশের একটি ভ্যান গিয়ে তাঁদের পরিচয় জানতে চান। পরিচয় জানানোর পরেও তাঁদের জোর করে ভ্যানে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। এক জন কোনও মতে পুলিশকে এড়িয়ে পরিচিতদের ফোন করেন।
অন্য জনকে পুলিশ জবরদস্তি থানায় নিয়ে গিয়ে পাসপোর্ট কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। নানা সূত্রে খবর পেয়ে শিলিগুড়ির এসিপি, আইসি ওই পর্যটকদের সসম্মানে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তারপরেও ওই এএসআই সেই নির্দেশ পালন করেননি বলে অভিযোগ।
ইতিমধ্যে পদস্থ পুলিশকর্তারা জানতে পেরে হস্তক্ষেপ করলে দু’জন পর্যটক ছাড়া পান। পরদিনই খালপাড়া ফাঁড়িতে যান পুলিশ কমিশনার।
এই ঘটনার পরে ইস্টার্ন হিমালয় ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা শীঘ্রই শিলিগুড়িতে বিদেশি পর্যটকদের জন্য পৃথক হেল্প ডেস্ক খুলবেন।