মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কবীর সুমন। — নিজস্ব চিত্র
যাদবপুরের সাংসদ থাকাকালীন তাঁর ধারাবাহিক বিদ্রোহ দল এবং দলনেত্রীর গলার কাঁটা হয়ে উঠেছিল। সেই পর্বে দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ-সহ তাঁর অমর উক্তি ছিল, ‘‘খালি খাও, খাও আর খাও।’’ সেই দল ২১১টি আসন জিতে রাজ্যে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর তিনিই ফের আবির্ভূত হলেন ২১ শে-র মঞ্চে! এবং আবেগমথিত কণ্ঠে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, ৩০০ বছর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে পুজো হবে। মন্দিরও হতে পারে!
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চে অনেক তারার মধ্যে সুমনও ছিলেন। তবু তাঁকে আলাদা করে চোখে পড়ছিল, কারণ, গত কয়েক বছর ওই মঞ্চে তাঁকে দেখা যায়নি। নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর আন্দোলনের পথ ধরে ২০০৯ সালে মমতার দেওয়া টিকিটে ভোটে জিতে সাংসদ হন সুমন। আর তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার বছর দুয়েকের মধ্যেই প্রকাশ্যে দলকে কটু ভাষায় আক্রমণ করে বিতর্কের সূত্রপাত করেন তিনি। এর পর দল এবং মমতার সঙ্গে সুমনের দূরত্ব ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর স্বাভাবিক পরিণতিতেই ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে সুমনকে টিকিট দেয়নি দল।
দ্বন্দ্ব-পর্বে তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চে সুমন যাননি। সেই সুমনই দূরত্ব ঘুচিয়ে এ বার ফের ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান-মঞ্চে হাজির হওয়াটাই ছিল যথেষ্ট বিস্ময়ের। আরও বিস্ময় ছিল তাঁর মুখে মমতার ভূয়সী প্রশংসা!
সুমনের বক্তব্য, প্রথম ইনিংসে দলিত এবং সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য মমতার সরকার দেদার অর্থ ব্যয় করেছে। সেই কারণে ‘চাটুজ্যে’, ‘বাঁড়ুজ্যে’, ‘মুখুজ্যে’রা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর বিরোধিতা করেছেন। সুমনের এই তত্ত্ব অবশ্য নতুন নয়। ভোটের আগে কয়েক মাস ধরে ফেসবুকে এই তত্ত্বই নিয়মিত প্রচার করেছেন গায়ক। সুমনের এ দিনের ভক্তিগীতির অন্তরাটি অবশ্য ছিল, ‘‘আজ থেকে ৩০০ বছর পরে মমতার নামে পুজো-আচ্চা হবে। মন্দিরও হতে পারে।’’ পরে নজরুল ইসলামের ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’ গানটি গেয়ে এ দিনের পারফরম্যান্স শেষ করেছেন সুমন।