school

School reopen: করোনা বাড়লে রাজ্যে স্কুল খোলায় দেরির আশঙ্কা

পুজোর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি ঠিক থাকলে তবেই উৎসবের ছুটির পরে স্কুল খুলবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

মহোৎসবের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তোড়জোড় চলছে পুরোদমেই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে স্কুল খুলতে একটু দেরিও হতে পারে। নবান্ন সূত্রের খবর, করোনার মতিগতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। দুর্গাপুজোয় বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না-করে ভিড় যে-ভাবে রাস্তায় নেমেছিল, যে-ভাবে অবাধ মেলামেশা হয়েছে, তাতে আগামী ১৫ দিন করোনার গ্রাফ কোন দিকে যায়, সে-দিকে নজর রাখা হচ্ছে। পুজোর ছুটির পরে স্কুল কবে খুলবে, সেটা চূড়ান্ত হবে তার পরেই।

Advertisement

পুজোর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি ঠিক থাকলে তবেই উৎসবের ছুটির পরে স্কুল খুলবে। সেই অনুযায়ী শিক্ষা শিবিরের একাংশের ধারণা ছিল, স্কুল খুলে যেতে পারে নভেম্বরের প্রথম কি দ্বিতীয় সপ্তাহে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “১০ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে স্কুল খোলার একটা লক্ষ্য স্থির হয়েছিল। এখন দেখা যাক, পুজোর মরসুমের পরে করোনা পরিস্থিতি ঠিক কোন দিকে গড়ায়।”

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে স্বাস্থ্য দফতর। স্কুল খোলার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তবে পুজোর আগে মুখ্যমন্ত্রী যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন, তখনই শিক্ষক, অভিভাবক, পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ আশায় বুক বেঁধেছিল যে, উৎসবের পরেই খুলবে স্কুল। এখন করোনার সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় স্কুল যদি না -খোলে, তা হলে সমস্ত দায়ভার চাপতে পারে পুজোর ভিড়ের উপরে। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, সরকার যদি পুজোর পরে স্কুল খোলার বিষয়টিকে সত্যিই গুরুত্ব-অগ্রাধিকার দিত, তা হলে পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি কড়াকড়ি করত। কঠোর ভাবে রাশ ধরলে ভিড় বেপরোয়া উঠতে পারত কি? সে-ক্ষেত্রে সরকার পুজোর সময় রাতের ঘোরাফেরায় নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে নিত কি না, সেই বিষয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

Advertisement

শিক্ষক, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের মধ্যে স্কুল খোলার দাবি অবশ্য ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা মেনে স্কুল খুলে দেওয়া খুব জরুরি। অন্তত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন অবিলম্বে শুরু না-করলেই নয়। যে-সব পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল, তারা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাড়িতে পড়ল। যারা বিজ্ঞান শাখার পড়ুয়া, তারা তো একাদশ ও দ্বাদশ মিলিয়ে এক দিনও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসও করতে পারল না।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি কলেজের ছাত্র অঙ্কন মাইতি বলেন, “২০২০ সালে যখন করোনা শুরু হয়, আমি তখন দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া। করোনার জন্য আমাদের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস প্রায় কিছুই হয়নি। আমি এখন কলেজে পদার্থবিদ্যা পড়ছি। কিন্তু দ্বাদশের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসগুলো করতে না-পারায় পদার্থবিদ্যার বেশ কিছু বিষয় বুঝতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।”

ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশনের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের একাংশের খেদ, স্কুলজীবনের শেষ দু’বছরে স্কুল নিয়ে তাদের কোনও স্মৃতিই থাকল না। পুজোর ছুটির পরে স্কুল খুললে কয়েকটা মাস অন্তত স্কুল যেতে পারবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করাটা খুবই জরুরি বলে মনে করছে তারা। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ রাজ্যে কতটা বাড়ছে, কালীপুজোর মধ্যেই সেটা বোঝা যাবে। আমরা সবাই চাইছি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে স্কুল খুলে দেওয়া হোক। অন্তত নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত স্কুল খোলা খুবই জরুরি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন