কর্মী ইউনিয়নের জুলুমবাজি বন্ধ না হলে কলকাতা বন্দরকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিলেন চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবু। ২০১৬-১৭ সালে বন্দরের সাফল্যের খতিয়ান জানাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ইউনিয়নের নেতারা যে গাছে বসে আছেন তারই শিকড় উপড়ে ফেলছেন।’’ কর্মীরা কাজে মন না-দিলে ভবিষ্যতে পেনশন দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দেন চেয়ারম্যান।
বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি থেকে লাগাতার ধর্না দিচ্ছে বন্দরের তৃণমূল অনুমোদিত কর্মী ইউনিয়ন। সাড়ে তিন মাসের টানা আন্দোলনে বন্দরের কাজে প্রভাব পড়ছে।
বুধবার আইএনটিটিইউসি-র সভানেত্রী দোলা সেনও ধর্নারত কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পর দিনই বন্দর চেয়ারম্যান সাফল্যের খতিয়ান দেওয়ার সাংবাদিক বৈঠকে তুলেছেন ইউনিয়নের জুলুমবাজির কথা।
দোলা সেন অবশ্য বলেন, ‘‘এক দিনও কাজ বন্ধ হয়নি। জুলুমবাজির প্রশ্ন আসছে কোথায়? মৃত কর্মীদের পোষ্যদের চাকরি দিতে ২০০৯ সালে চুক্তি হয়। বন্দর তা না মানাতেই ধর্না চলছে।’’
কর্তৃপক্ষ অবশ্য নতুন কর্মী নিয়োগে রাজি নন। এক কর্তা বলেন, বন্দর লোকসানে চলছে। কী ভাবে কর্মী নিয়োগ হবে। নিরাপত্তা, ট্রাফিক এবং মেরিন বিভাগে চুক্তিতে ৮০০ অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ান রয়েছেন। ইউনিয়ন তাঁদের সরিয়ে নিজেদের লোক ঢোকাতে চাইছে। তৃণমূল কর্মী ইউনিয়নের নেতা অসীম সূত্রধর বলেন, ‘‘বছরে ৩১ কোটি টাকা ওভারটাইম দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। সেই টাকায় ১২০০ মৃতের পোষ্যদের চাকরি দেওয়া সম্ভব।’’
বন্দর চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘কেন্দ্র বলে দিয়েছে পেনশনের টাকা নিজেদের জোগাড় করতে হবে। পেনশন ফান্ডের জন্য এ বারও ৪৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের দেখতে গিয়ে বন্দরের লোকসান হচ্ছে। আর কর্মীরা কাজ বন্ধ করে জুলুমবাজি করছে। আয় কমনে পেনশনও বন্ধ হবে।’’
কলকাতা বন্দরে এখন ৫৩০০ কর্মচারী। ৩০ হাজার পেনশন প্রাপক। দু’তিন বছরে এই পেনশন প্রাপকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৩ হাজার। তার জন্য ৪৬০০ কোটির তহবিল তৈরি জরুরি। সেই কারণে নিয়োগে রাশ টেনে বাড়তি আয় পেনশন তহবিলে ঢালছে কর্তৃপক্ষ। চেয়ারম্যান জানান, ডক লেবার বোর্ডে এখন মাত্র ১৪০ জন কর্মী আর ৭০০০ পেনশন প্রাপক। লোকসানে চলায় তাঁরা ২০০৭ সালের নিয়মে পেনশন পান। বন্দরে একই জিনিস শুরু হয়েছে। কর্মীদের এখনই সতর্ক হতে হবে।